জীবন বাঁচাতেই প্রয়োজন হয় ওষুধের। আর তাই জীবন বাঁচাতে রোগ নির্ণয় করে ডাক্তার যে ওষুধ লিখে থাকেন তাই গ্রহণ করে থাকে সাধারণ রোগীরা। কিন্তু রোগীকে যদি ভুল ওষুধ দেয়া হয় অথবা রোগী যদি ডাক্তারের নির্দেশণা না বুঝে ভুল ওষুধ সেবন করেন সেক্ষেত্রে জীবন বাঁচানোর ওষুধটিই হতে পারে তার মৃত্যুর প্রধানতম কারণ।
আমাদের দেশের অধিকাংশ ডাক্তারই প্রেসক্রিপশনে এমন ভাবে লিখে থাকেন যা বুঝে উঠতে কষ্ট হয় শতকরা ৯০% রোগীর। সাধারণ রোগীতো দূরের কথা খোদ ফার্মেসী ওয়ালাদেরই বুঝতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয় অনেক নামকরা ডাক্তাদের লিখা প্রেসক্রিপশন। এ বিষয়টি নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগ এবং মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশ থাকলেও কোন ভাবেই যেন আমলে নিচ্ছেন না বেশিরভাগ ডাক্তাররা।
বিষয়টি দেখে মনে হচ্ছে কোনভাবেই প্রেসক্রিপশনের স্পষ্ট করে লিখার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না তারা। শুধু মাত্র ডাক্তাদের লেখার কারণে কতসংখ্যক মানুষ এক ওষুধের জায়গায় ভুল করে অন্য ওষুধ সেবন করছেন তা হয়তো ডাক্তাররা নিজেরাই জানেন না! বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে লেখালিখি হলেও বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন না আমাদের ডাক্তাররা! এমনই এক বুঝতে না পারা প্রেসক্রিপশন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গাজীপুরের ইকবাল সরকার। তিনি তার ফেসবুকে বিষয়টি শেয়ারও করেছেন। তিনি তার টাইমলাইনে ছবিসহ লিখেছেন, তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে টিকিট নিয়ে, ছেলেকে নিয়ে গেলাম নামকরা একজন ডাক্তারের কাছে।
শুধু গজ গজ করে লিখলেন। প্রেসক্রিপশন নিয়ে ফার্মেসীতে গেলাম, এক এক জন পড়লেন, এক এক রকমের ওষুধের নাম। নিজেও বিভ্রান্ত হলাম- সমাধান কোথায়? বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী অভিভাবক ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিলে শতাধিক মন্তব্য দিয়ে বিভিন্নজন বিভিন্ন কথা লিখেছেন। তাদের অধিকাংশই ডাক্তাদের এ ধরণের লিখার বিরোধীতা করেছেন।
মোবারক হোসাইন মুবি লিখেছেন, হয়তো উনার নিজের ওষুধের দোকান আছে শুধু ওই ফার্মেসীতে গেলেই এটা বুঝবেন। মুমেন আব্দুল্লাহ লিখেছেন, চেম্বারে না গিয়ে ফ্রিতে দেখাইছেনতো ভাই এই জন্য রাগে গজ গজ কইরা লিখছে। চেম্বারে যান সব ঠিক কইরা দিবে। হা হা হা। তানজিরুল ইসলাম লিখেছেন, নামকরা ডাক্তার। এতো সহজেই বুঝবেন? নরুল আমিন সিকদার লিখেছেন, মহামান্য হাইকোর্ট পরিষ্কার ভাবে লিখার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন
বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী ইকবাল সরকারের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের যে ডাক্তার প্রেসক্রিপশনটি লিখেছেন তার নাম প্রকাশ করে তিনি তাকে ছোট করতে চাচ্ছেন না। তবে তিনি দাবি জানান সাধারণ রোগীরা যেভাবে লিখলে প্রেসক্রিপশন বুঝে ওষুধ সেবন করতে পারবে সেভাবেই যেন লিখা হয়। অন্যদিকে বিষয়টি নিয়ে সাধারন নাগরিকদের সাথে আলাপ কালে তারা জানান, সাধারণ রোগীরা যেহেতু প্রেসক্রিপশন দেখে ওষুধ সেবন করেন এক্ষেত্রে তাদের বুঝবার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া উচিত।