দক্ষিণ কোরিয়ায় গত এক বছরে গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা ছয় হাজারেরও বেশি নগ্ন ও আপত্তিকর দৃশ্য যেগুলো ‘স্পাই ক্যাম পর্নো’ নামে পাওয়া গেছে। টয়লেটে এবং পোশাক পরিবর্তনের ঘরে গোপন ক্যামেরায় তোলা এসব আপত্তিকর ছবি দেশটির একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ওইসব ভিডিও ছেড়ে দেয়া হয় কোনো না কোনো পর্নোগ্রাফির ওয়েবসাইটে।
স্পাই ক্যাম পর্নোর শিকার ৮০ শতাংশ নারী। গোপন ক্যামেরা আছে কিনা সেটি পরীক্ষা করে দেখার জন্য সিউলের পাবলিক টয়লেটগুলো এতদিন মাসে একবার চেক করা হতো। কিন্তু এখন থেকে টয়লেটের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি প্রতিদিন এ কাজটি করবেন।
প্রতিবাদকারীরা বলছেন, সিউলে বাড়তে থাকা এ ধরনের অপরাধ যদি অচিরেই নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে তা অন্য দেশেও একইভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর তখন সেটি প্রতিকার হবে খুবই কঠিন।
এ বছরের শুরুর দিকে হাজার হাজার কোরীয় নারী এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছিলেন। তারা গোপন ক্যামেরা ব্যবহারের বিরুদ্ধে সেই বিক্ষোভে লিখেছিলেন ‘আমার জীবন তোমার কাছে পর্নো না’।
দেশটির অ্যাকটিভিস্টরা বলছে মেয়েরা সব সময় একটা আতঙ্কের মধ্যে থাকেন, কথন তাদের অনুমতি ছাড়ায় ছবি তোলা হবে অথবা ভিডিও করা হবে। প্রযুক্তিগতভাবে বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর একটি হল কোরিয়া, একই সঙ্গে ডিজিটাল সংযুক্তিতেও এগিয়ে।
স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা এখানে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৯০ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্করই রয়েছে স্মার্টফোন এবং অন্তত ৯৩ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতিই এ ধরনের অপরাধীকে শনাক্ত করতে বা ধরতে কঠিন করে তুলেছে।
২০১৫ সালে ডিজিটাল সেক্স ক্রাইম আউট নামে একটি গ্রুপ তৈরি করা হয়, যার নাম হা ইনা, আর এটি তৈরি করেন পার্ক সো-ইয়ুন। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল কুখ্যাত ‘সোরানেট’ নামের একটি ওয়েবসাইটকে ধ্বংস করা।
এ সাইটে নারীদের কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই তাদের হাজার হাজার ভিডিও আপলোড এবং শেয়ার করা হতো, আর যার ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল কয়েক লাখ।
সেখানে গোপন ক্যামেরার ভিডিওগুলোর বেশিরভাগই ছিল পোশাক বদলানোর রুম বা টয়লেট থেকে ধারণ করা অথবা কোনো সাবেক প্রেমিকের তোলা ভিডিও যা প্রতিশোধ হিসেবে ওই ওয়েবসাইটে দিয়ে দেয়া হতো। সেসব ঘটনার শিকার অনেক নারীকে এমনকি আত্মহত্যার পথ পর্যন্ত বেছে নিতে হয়েছে।