মোমো খেলার চক্করেই নাকি মাঝরাতে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিলেন এক যুবক। বাবা-মার এমন অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে বছর পঁচিশের ওই যুবকের ডায়েরির পাতায় লেখা সুইসাইড নোট পায় পুলিশ।
সেখানেও রয়েছে মোমো গেমের কথা। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতন ২ ব্লকের তুরকায়। কালাচাঁদ দাস নামে ওই যুবককে নিয়ে উদ্বিগ্ন তার পরিবার।
কালাচাঁদ রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। জানা গেছে, স্থানীয় বাজারে এক বন্ধুর মোবাইল দোকানে আড্ডা দিতে যেতেন কালাচাঁদ। পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত রোববার রাত দেড়টার দিকে জেঠাতো ভাই অরবিন্দ দাসকে ফোন করেন কালাচাঁদ। অরবিন্দ বলেন, ‘ভাই ফোন করে বলে, ‘আমার বাঁচার ইচ্ছে নেই। ইহজগতে নয়, আমাকে পরজগতে ডাকছে। আমি সেখানে চললাম।’
এই বলে ফোন কেটে দেওয়ায় আমি ফের ফোন করি। কিন্তু ফোন ধরেনি কালাচাঁদ।’ অরবিন্দ তখন বাড়িতে খবর দেন। বাড়ির লোকজন উঠে দেখেন, কালাচাঁদ ঘরের দরজা খুলে বাইরের দিকে ছুটছেন।
ওই যুবকের বাবা কানাই দাস জানান, সেই সময় কালাচাঁদকে আটকাতে গেলে তিনি বলেন- ‘আমাকে ছেড়ে দাও, আমি মরে যাব। আমাকে মোমো ডাকছে।’
স্বজনদের দাবি, অনেক কষ্টে আটকানো হয় ওই যুবককে। সেই সময় তার পকেটে একটি দড়িও পাওয়া যায়। ছেলেকে বাঁচাতে মোবাইলটি ভেঙে পুকুরে ফেলে দেন কানাই।
পরে কালাচাঁদের ডায়েরি ঘেঁটে মেলে সুইসাইড নোট। একটি পাতায় লেখা ছিল, ‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। মোমো অ্যাপসে চোখের দৃষ্টি পড়লেই মরে।’ এমনিতে কালাচাঁদ কথা কম বলেন, স্বভাবও চাপা। তবে ওই ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন বলেই দাবি স্বজনদের।
কানাই বলেন, ‘সেই রাত থেকেই ছেলে বদলে গেছে। কেমন গুম হয়ে বসে আছে। কারো সঙ্গে কথা বলছে না। খুব দুশ্চিন্তায় আছি।’ স্থানীয় আবেদ বক্সও বলেন, ‘ছেলেটির মধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ করছি। এই ধরনের মারণ গেম বন্ধ হওয়া উচিত।’ ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে মোবাইলে মোমো মেসেজ আসার দাবি করেন জেলার নারায়ণগড়ের এক ছাত্রও। দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্র নরোত্তম দোলাই ভয় পেয়ে এক শিক্ষককে সব জানালে শিক্ষক তাকে প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করতে বলেন।