বিমান ‘চুরি’ করে উড়াল দেয়ার পিছনে রহস্য কী?

একটি বিমান চুরি করে উড়াল দেয়ার পরপরই তা বিধ্বস্ত হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটল-টাকোমা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাতে একজন এয়ারলাইন কর্মী ঐ বিমানবন্দর থেকে যাত্রীশূণ্য উড়োজাহাজটি চুরি করে উড্ডয়ন করেন। বিমানটি উড্ডয়নের পরপরই সিয়াটল-টাকোমা বিমানবন্দরের কাছের একটি দ্বীপের পাশে সাগরে বিধ্বস্ত হয়।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বলেছে, ঐ এয়ারলাইন কর্মী অনুমতি ছাড়া যাত্রীশূণ্য বিমানটি নিয়ে উড়াল দেয়ার পর সেটি সাউথ পিজেট সাউন্ডে বিধ্বস্ত হয়। বিমানটি উড্ডয়নের সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্রের দু'টি ফাইটার জেট পিছু নিয়েছিল।

যিনি অনুমতি ছাড়া বিমানটি চুরি করে উড়াল দিয়েছিলেন বলে বলা হচ্ছে, তিনি বেঁচে আছেন নাকি তাঁর মৃত্যু হয়েছে, সে ব্যাপারে এখনও কিছু বলা হয়নি। তবে এটি কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নয় বলে পিয়েস কাউন্টি শেরিফের কার্যালয় থেকে এক বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে।

তাতে আরও বলা হয়েছে, বিমানটি নিয়ে উড়াল দেয়া ব্যক্তির বয়স ২৯ বছর এবং তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পিয়র্স কাউন্টির বাসিন্দা। একইসাথে পুলিশ ঐ ব্যক্তিকে আত্নঘাতী বলে উল্লেখ করেছে।

বিমানটি হরাইজন এয়ারলাইন্সের মালিকানাধীন দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট 'টারবোপ্রপ কিউ ৪০০'। এই বিমানে যাত্রীদের জন্য আসন ছিল ৭৬টি। তবে উড্ডয়নের সময় এটিতে কোনো যাত্রী ছিল না।

বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এক টুইটবার্তায় বলেছে, একজন এয়ারলাইন কর্মী একটি যাত্রীশূণ্য বিমান নিয়ে বিমানবন্দরের কন্ট্রোল টাওয়ার নির্দেশনা অমান্য করে অবধৈভাবে উড্ডয়ন করে।

কন্ট্রোল টাওয়ার থেকে তাকে বিমানটি অবতরণের ব্যাপারে রাজী করানোর চেষ্টা করা হয়। কিন্তু সেই ব্যক্তি কোনো সাড়া দেয়নি। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাতে দেখা যায়, বিমানটি আকাশে লক্ষ্যহীনভাবে ঘুরছে।

উত্তর আমেরিকার বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, দু'টি এফ-১৫ বা ফাইটার জেট বিমানটির পিছু নিয়ে সেটিকে অবতরণের জন্য ঐ ব্যক্তিকে রাজী করানোর জন্য কাজ করছিল। কিন্তু বিমানটি প্রশান্ত মহাসাগরের উপর কেটোরন দ্বীপের দক্ষিণে বিধ্বস্ত হয়।

কেন সে বিমানটি চুরি করে উড়াল দিয়েছিল? এটি এখনই পরিস্কার নয়। তবে হরিজন এয়ারলাইন্সের ঐ কর্মী বিমানটি নিয়ে উড্ডয়নের পরপরই কন্ট্রোল রুমের সাথে যে কথাবার্তা হয়েছিল, তার অডিও রেকর্ডে কিছু ধারণা পাওয়া যেতে পারে যে কী ঘটেছিল?

বিমানটিতে জ্বালানী কতটুকু আছে, তা নিয়ে ঐ ব্যক্তিকে সংশয় প্রকাশ করতে দেখা যায় অডিও রেকর্ডিংয়ে। এছাড়া তাকে বলতে শোনা যায়, তিনি নিজেই বিমানটি অবতরণ করাতে পারবেন, কারণ তিনি এরকম কিছু গেম খেলেছেন। অডিওতে কথাবার্তায় তাকে ভাবলেশহীন মনে হয়েছে।

বিমানটি কিভাবে সে নিয়েছে? এয়ারলাইন্সের এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিমানটি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নেয়া হয়েছিল। সেখান থেকে বিমানটি ঐ কর্মী নিয়ে উড়াল দিয়েছিল। একজন বিশেষজ্ঞ বলেছেন, এ ধরণের বিমান চালু করার ক্ষেত্রে খুব একটা জটিলতা নেই। সে কোনোভাবে তা চালু করার পর উড্ডয়ন করেছিল।

যদিও বলা হচ্ছে, ঘটনাটি কোনো সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নয়। কিন্তু ঐ ব্যক্তি কেন ঘটনাটি ঘটিয়েছে, তা এখনও রহস্য রয়ে গেছে। এখন এফবিআই তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছে। এয়ারলাইন্সের পক্ষ থেকে তদন্তে সহায়তা করার কথা বলা হয়েছে।

শেয়ার করুন: