কুষ্টিয়ার ২৫০ শয্যার হাসপাতালে গত বুধবার প্রসব বেদনায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কবুরহাট গ্রামের মনির হোসেনের স্ত্রী খুশি খাতুন।
ভর্তির চারদিনের মাথায় শনিবার সকালে হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, তার গর্ভের সন্তান আর জীবিত নেই। মৃত সন্তানকে অপসারণ করতে হবে।
বাধ্য হয়ে খুশি খাতুনকে ভর্তি করা হয় কুষ্টিয়া সদর উপজেলা মোড়স্থ একটি বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, তার গর্ভের সন্তান জীবিত রয়েছে।
পরবর্তী সময়ে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে খুশি খাতুনের একটি ফুটফুটে ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। আর এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন খুশি খাতুন ও তার পরিবার।
প্রসূতি খুশি খাতুন জানান, বুধবার তাকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আলট্রাসনোগ্রামের রিপোর্টে দেখা যায়, তার গর্ভে সন্তান রয়েছে।
চিকিৎসক তাদের সুবিধা মতো সময়ে ডেলিভারি করবেন বলে জানান। কিন্তু তিনদিন পর শনিবার ভোর ৬টার দিকে জানানো হয় গর্ভে যে সন্তান রয়েছে তা জীবিত নয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন কথায় তিনি ভেঙে পড়েন।
পরে তার স্বামী ও বাবা তাকে বেসরকারি ইসলামিয়া হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তার শারীরিক অবস্থা নিশ্চিত হতে আলট্রাসনোগ্রাম করানো হয়। রিপোর্টে জানানো হয়, তার গর্ভে যে সন্তানটি রয়েছে তা জীবিত। পরবর্তী সময়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দ্রুত অস্ত্রোপচার করেন। এতে তার পুত্র সন্তান জন্ম নেয়।
এ বিষয়ে ইসলামিয়া হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু সাঈদ জানান, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসাপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ডের কারণে মা ও শিশুর জীবন বিপন্ন হতে চলেছে। এমন আচরণ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে কখনো কাম্য নয়।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন,
‘খুশি নামের এক প্রসূতি নারী হাসপাতালে ভর্তি হলেও মৃত সন্তান হয়েছে মর্মে হাসপাতালের কেউ নিশ্চিত করেনি। আর এমন ঘটনা সঠিক নয়। যদি হাসপাতালের কোনো স্টাফ জড়িত থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সচেতন নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা।
সচেতন নাগরিক কমিটি কুষ্টিয়ার সভাপতি রফিকুল আলম টুকু বলেন, ‘সম্প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার বিভিন্ন অভিযোগ আসছে। এ বিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দায়িত্বশীল হতে হবে। আর খুশি খাতুন নামের এক প্রসূতি যে ঘটনার স্বীকার হয়েছেন, তা সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে হবে।’