নিরাপদ সড়কের দাবিতে ও গতকাল জিগাতলায় হামলায় প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগ থেকে জিগাতলার উদ্দেশে যাওয়া কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর মিছিলে লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাঁদানে গ্যাসও নিক্ষেপ করেছে। এ সময় একদল হেলমেটধারীও সশস্ত্র হামলায় অংশ নেয়। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী ও তিন সাংবাদিক আহত হয়েছেন। অন্তত ৩২ জন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা একটার দিকে শাহবাগ থেকে জিগাতলার দিকে মিছিলটি যায়। ওই সময় আগে থেকে অবস্থান নেয়া পুলিশ সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। একইসঙ্গে শুরু হয় লাঠিচার্জ।
কাঁদানে গ্যাস ও লাঠিচার্জ থেকে শিক্ষার্থীদের কেউ কেউ এ সময় লেকের পানিতে ঝাপিয়ে পড়েন। তাদেরকে উপরে তুলে এনে পেটাতে দেখা গেছে। ধানমন্ডি থানাতেও বেশ কয়েকজনকে ধরে নিয়ে যেতে দেখা যায়।
এছাড়া জিগাতলায় সীমান্ত স্কয়ারের দিকে পুলিশ সাঁজোয়া যান নিয়ে শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দিলে তারা আশপাশে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে পড়ে। অনেকে নির্মাণাধীন ভবনগুলোয় আশ্রয় নেয়। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখন সীমান্ত স্কয়ারের দিকে অবস্থান করছে।
মিছিলের সুনির্দিষ্ট নেতা না থাকলেও বেশিরভাগই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী। বুয়েট, জগন্নাথের শিক্ষার্থীরাও সেখানে ছিলেন।
মিছিলে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আব্দুল করিম জানান, আমাদের সেখানে অবস্থানের কোনো পরিকল্পনা ছিল না। জিগাতলা থেকেই মিছিল ঘুরিয়ে নেয়ার কথা ছিল। পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই অতর্কিত আক্রমণ করে শিক্ষার্থীদের ওপর।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বুয়েট শিক্ষার্থী জানান, ধানমন্ডি ৩ নং রোডের আশপাশে যেসব শিক্ষার্থী পুলিশের লাঠিচার্জ থেকে বাঁচার চেষ্টা করছিল, তাদের ওপর লাঠি হাতে হামলা করতে দেখা যায় একদল হেলমেটধারীকে। তবে দুপুর তিনটে নাগাদ এলাকা পুলিশের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
হামলায় অন্তত তিন সাংবাদিক আহত হয়েছে। এর মধ্যে এপির ফটোসাংবাদিক এ এম আহাদের অবস্থা গুরুতর। শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগই আশপাশের হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেলে কলেজে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেকেরই মাথায় আঘাত গুরুতর।
এ বিষয়ে পুলিশের রমনা জোনের উপ-কমিশনার মারুফ হোসেন সরদার জানান, শিক্ষার্থীরা ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের দিকে যাচ্ছিল। বেশ কয়েকবার অনুরোধ করলেও তারা শোনেনি। পুলিশ বাধ্য হয়েই একশনে গেছে।