দেশের শিক্ষার্থীদের ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনকে সাধুবাদ জানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বার্তা দিয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরে যেতেও অনুরোধ করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। সঙ্গে প্রতিশ্রুতি দেন, দাবি পূরণ করা না হলে তিনিও রাস্তায় নামবেন।
এরপরই সাকিবের বক্তব্য নিয়ে কাটাছেঁড়া শুরু হয়। অনেকে তার বক্তব্যকে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ আখ্যা দিয়ে বার্তার নিচে কমেন্টে সমালোচনায় মেতে ওঠেন। বিষয়টি নজর এড়ায়নি সাকিবেরও। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেই আরেকটি বার্তায় তার বক্তব্যকে ভুল ব্যাখ্যা না করার অনুরোধ করেছেন সাকিব।
সাকিব ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেয়া দ্বিতীয় বার্তায় বলেছেন, ‘আমার সকল ভক্তদের জানাচ্ছি যে আপনারা হয়তো আমার ব্যাক্ত করা কথায় আমাকে ভুল বুঝছেন। দয়া করে আমাকে ভুল বুঝবেন না, আমারও আপনাদের সবার মতো পরিবার আছে, যাদের নিরাপত্তা আমার কাছেও অনেক বেশি মূল্যবান।
আমি আপনাদেরই একজন, আমি সব সময় আপনাদের সাথে ছিলাম, আছি এবং কথা দিচ্ছি ভবিষ্যতেও থাকব। আমি শুধু বলতে চাই যে আপনাদের আন্দোলনকে একটি সঠিক ফলাফলে পৌঁছে দেয়ার জন্যে আমাদের সরকারকে সুযোগ দেয়া উচিত। যেন সরকার খুব দ্রুত আপনাদের দাবি বাস্তবায়ন করতে পারে।’
গত ২৯ জুলাই ঢাকার শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হলে তাদের সহপাঠীরা রাস্তায় নেমে আসে। পরদিন সারা ঢাকায় শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান নিলে পরিবহন ব্যবস্থা প্রায় অচল হয়ে পড়ে। ছুটির দিন শুক্রবারও কয়েক জায়গায় শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দেখা গেছে।
এই অবস্থায় সাকিব শুক্রবার ফেসবুক পেজে প্রথমদফায় লেখেন, ‘আমি এখন ফ্লোরিডায় আছি। আজ এক গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে আমার তরুণ ফ্যানদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চাই।’
‘গত ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাস চাপায় দুই স্কুল শিক্ষার্থী দিয়া ও আবদুল করিম নিহত হওয়ার ঘটনায় আমি প্রচণ্ড মর্মাহত ছিলাম। কিন্তু যখন দেখলাম তার সহপাঠী থেকে শুরু করে সারাদেশের ছাত্রছাত্রীরা দোষীদের শাস্তি দাবি ও নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছে,
তখন গর্ববোধ করেছি বাংলাদেশের একজন নাগরিক হিসেবে। দেশে থাকলে আমিই তোমাদের অটোগ্রাফ নেয়ার জন্য চলে আসতাম।’
সাকিবের নেতৃত্বে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে টি-টুয়েন্টি সিরিজ খেলছে বাংলাদেশ। টাইগাররা এখন যুক্তরাষ্ট্রে। রোববার ও সোমবার বাংলাদেশ সময় সকাল ৬টায় সিরিজের বাকি দুটি টি-টুয়েন্টি।
যুক্তরাষ্ট্র থেকেই দেশের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে সাধুবাদ জানিয়ে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার লেখেন, ‘তোমাদের সাধুবাদ জানিয়ে বলতে চাই, তোমাদের দাবি কার্যকর হচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিহত পরিবারকে আর্থিক সহায়তা ছাড়াও নিরাপদ সড়ক আইন করতে আন্তরিকভাবে কাজ করছেন।
অভিযুক্ত পরিবহনের রুট পারমিট বাতিলসহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ অবস্থায় তোমাদের কাছে বিনীত অনুরোধ করবো, ক্লাসে ফিরে পড়াশোনায় মনোনিবেশ করতে। তোমরা যা করেছ তা এদেশে ইতিহাস হয়ে থাকবে। এ অর্জন সফল হবে তোমাদের পড়ার টেবিলে ফিরে যাওয়ার মাধ্যমে।’
আন্দোলন থেকে শিক্ষার্থীরা ৯টি দাবি তুলেছে। সাকিব বলছেন এই দাবি সরকার পূরণ না করলে তিনিও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেবেন, ‘তোমাদের দাবি পূরণ হয়েছে এবং হচ্ছে। ব্যত্যয় ঘটলে আমাকে পাবে তোমাদের সাথে।’
দীর্ঘ এই পোস্টের পর তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ায় সাকিব সকলের ভুল ভাঙাতে এগিয়ে আসেন আরেকটি বার্তার মাধ্যমে।