আগামী বছর বিশ্বকাপ। এখনই সময় দলকে ঢেলে সাজানোর। প্রয়োজনে নতুন খেলোয়াড়কে সুযোগ দিয়ে দলের অবস্থা উন্নতি করতে হবে। সৌম্য সরকার, লিটন দাস, এনামুল হক বিজয়, সাব্বির হোসেন প্রয়োজনের থেকে অনেক বেশি সুযোগ পেয়েছেন।
এরা প্রায় প্রত্যেকেই ৪ বছরের বেশি সময় ধরে জাতীয় দলে নিয়মিত। ৪ বছরে বলার মতো পারফরম্যান্স এখনো তাদের ঝুলিতে যোগ হয়নি। সৌম্য যদিও প্রথম বছর দুর্দান্ত এক ঝলক দেখিয়ে হারিয়ে গেছেন।
তাই এখনই সময় দলের আপদ বিদায় করার। প্রয়োজনে লিগ থেকে খেলোয়াড় নিয়ে আসতে হবে। প্রিমিয়ার লিগে নিয়মিত পারফরম্যান্স করছে এমন খেলোয়াড়ের সংখ্যা নেহাত কম নয়।
এছাড়া তাদের মধ্যে এক সময় জাতীয় দলে খেলেছেন এমন খেলোয়াড়ও রয়েছেন। তুষার ইমরান, শাহরিয়ার নাফিস এবং নাইম ইসলামদের মতো অভিজ্ঞরা লিগ পর্যায়ে নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে তাদেরকে জাতীয় দলের জন্য ভাবাও হচ্ছে না।
তরুণ খেলোয়াড় বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। কিন্তু বিশ্বকাপ অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি জায়গা। সেখানে ভবিষ্যৎ খেলোয়াড়ের কথা বলে পরীক্ষা করার কোন সুযোগ নেই। সেখানে ইতিমধ্যে পরীক্ষিত খেলোয়াড়দের সুযোগ দেওয়া না হলে ফলাফল বিপর্যয়ের আশংকাই করা যেতেই পারে।
বিশ্বকাপ চার বছর পর পর আসে। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য, বিশ্বকাপের পর থেকেই চিন্তা করা যেতে পারে। সেখানে পরের বিশ্বকাপ পর্যন্ত ৪ বছর সুযোগ থাকবে নতুন খেলোয়াড় বের করে নিয়ে আশার।
বাংলাদেশের এখন বড় সমস্যা কয়েকটি জায়গায় নিয়মিত পারফর্মার খুঁজে না পাওয়া। তামিমের যোগ্য সঙ্গী এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিশ্বকাপের কথা যদি চিন্তা করা হয় সে ক্ষেত্রে তামিমের যোগ্য ওপেনিং পার্টনার এখনই ঠিক করতে হবে।
তৃতীয় উইকেটে এতদিন যোগ্য খেলোয়াড় পাওয়া যাচ্ছিল না। শেষ পর্যন্ত সেই দায়িত্ব সাকিব আল হাসান নিজেই নিয়েছেন। আপাতত এখানেই তাঁকে নিয়মিত করা উচিত। তৃতীয়তে নেমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের দুর্দান্ত খেলেছেন বিশ্ব সেরা এই অলরাউন্ডার।
বাংলাদেশের একটি বড় সমস্যা সাব্বিরের জায়গায় নিয়মিত পারফর্মারের অভাব। যাকে বলা হয় ফিনিশার। যে দ্রুত গতিতে রান তুলতে পারবেন। সাব্বির হার্ড হিটার কোটায় খেলে এখন পর্যন্ত ৪ বছরে কিছুই করতে পারেননি।
এখন এই জায়গা নিয়ে ভাবার সময় এসে গিয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটিতে নিয়মিত পারফরমার না থাকায় বাংলাদেশ প্রায় প্রতিটি ম্যাচেই ১৫-২০ রান কম করে থাকে। সাব্বির লম্বা সময়ে পেয়েছেন। এখন সেই সুযোগ আরিফুল হকের পাওয়া উচিত।
আসন্ন কয়েকটি সিরিজে আরিফুলকে সুযোগ দিয়ে দেখতে হবে তিনি দলের সঙ্গে কতোটা মানানসই হয়ে উঠতে পারেন। প্রয়োজনে সাব্বিরকে ফর্মে ফেরানোর জন্য এই সময় আলাদা প্রস্তুতি নিতে হবে বিসিবির। যদি আরিফ দলের প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী পারফর্ম করতে না পারেন সে ক্ষেত্রে আবারো সাব্বিরকে সুযোগ দেওয়া যেতে পারে।
আগামী সিরিজ গুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু বিশ্বকাপ তাঁর থেকেও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এখনই সময় দলকে গুছিয়ে নেওয়ার। দলের আগাছাগুলোকে দূর করে নতুন চারা লাগানো সময় এসে গিয়েছে। ক্রিকেট ১১ জনের খেলা। এখন আর সেই সময় নেই যেখানে প্রতিটি ম্যাচে এক দুই জন ‘দুধভাত’ খেলোয়াড় দলে থাকার।