রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ‘ঘটনাটি দুঃখজনক, আমরা মর্মাহত। প্রধানমন্ত্রীও দুঃখ পেয়েছেন, কষ্ট পেয়েছেন।
সে কারণে তিনি আমাকে পরিবারটির খোঁজ-খবর নেওয়ার জন্য পাঠিয়েছিলেন। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী মর্মাহত। তিনি খুবই কষ্ট পেয়েছেন। তাই এ বিষয়ে তিনি খুবই কঠোর।’
সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নিজ কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা বলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মঙ্গলবার মহাখালীতে বাসচাপায় নিহত দিয়া খানম মীমের বাসায় গিয়েছিলেন তার পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা জানাতে।
তিনি বলেন, ‘গতি নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা বা পাল্লাপাল্লি করা, যে কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটুক তা খুঁজে বের করা হবো। যে কারণে বা যার কারণে ঘটনা ঘটেছে তাদের শাস্তি পেতে হবে। এই নৈরাজ্যের প্রতিকার হওয়া উচিত।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘মীমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম যে এলাকায় থাকেন এটি আমার নির্বাচনি এলাকা। তাই সেখানে গিয়েছিলাম। প্রধানমন্ত্রীও আমাকে যেতে বলেছিলেন।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনা যারা ঘটিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে গাড়ি জব্দ করা হয়েছে। গাড়ির চালক হেলপারদের গ্রেফতার করা হয়েছে। যার গাফিলতিতেই এই দুর্ঘটনা ঘটলো, তাকে শাস্তি পেতে হবে। জাহাঙ্গীরের সঙ্গে আমি কথা বলেছি।
তিনি আমাকে বলেছেন, এটি অদক্ষ ড্রাইভারের কাজ। তাই আমি আবারও বলছি, অদক্ষ চালক হোক, ফিটনেসবিহীন গাড়ি হোক অথবা ট্রাফিক আইন অমান্য করে হোক, যে কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটেছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবো। এজন্য দায়ীদের শাস্তি পেতেই হবে।’
রাস্তায় ছাত্রদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ছাত্ররা বিক্ষোভ করছে, এটি তারা করতেই পারে। কারণ, তারা তাদের সহপাঠীকে হারিয়েছে, বন্ধুকে হারিয়েছে। তাদের আবেগ আছে তাই তারা বিক্ষোভ করছে।
আমি ছাত্রদের এই বিক্ষোভকে সমর্থন করি। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন যেন ত্বরিতগতিতে এই দুর্ঘটনার বিচার হয়। তাই ছাত্রদের অনুরোধ করবো যেন তারা বাসায় ফিরে যায়।’
দুর্ঘটনার মামলা ৩০২ ধারায় করা হয় না কেন—এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমি আইন বিষয়ে ভালো জানি না। তবে ইচ্ছা করে হত্যা করলে তো ৩০২ ধারায় মামলা হয়।’
বাসের প্রতিযোগিতা বন্ধের নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার স্বীকার করতে বাধা নেই এটি রাস্তায় হয়। ক্যানসার ও কিডনি রোগে বছরে যত মানুষ মারা যায়, দুর্ঘটনায় তারচেয়ে বেশি মানুষ মারা যায়।
ঢাকা শহরের এই দুর্ঘটনা বন্ধ করতে সেইফ ঢাকা নামে একটি প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। ঢাকা শহরের সড়ক ব্যবস্থাপনায় নতুন নতুন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে যানজট কমে যাবে। যানজট কমে গেলে সড়ক দুর্ঘটনাও অনেকাংশে কমে যাবে।’
চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তারা আন্দোলন করে। এক্ষেত্রে এমন হলে কী করবেন—এ প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয়। আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবো।’
আসামে বাঙালি নিয়ে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ থেকে খুব বেশি মানুষ মাইগ্রেন্ট হয়নি বলেই আমি জানি। কাজেই চিন্তার কিছু নেই। তবে বিষয়টি নিয়ে আমি অত বেশি ক্লিয়ার নই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এটি দেখছে।’