ঢাকা: রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসের চাপায় দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় তাদের পরিবারকে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫ লাখ টাকা করে দিতে জাবালে নূর পরিবহনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ সোমবার (৩০ জুলাই) এ আদেশ দেন। আদালতে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল নিজেই শুনানি করেন।
পরে ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, বিদ্যমান যে ট্রাফিক আইন আছে তা যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের নিহত দুই শিক্ষার্থীর প্রত্যেকের পরিবারকে ব্যাংক ইন্টারেস্টসহ দুই কোটি করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
তিনি বলেন, আদালত দুই পরিবারের তাৎক্ষণিক চাহিদা মেটানোর জন্য জাবালে নূর পরিবহনকে এক সপ্তাহের মধ্যে ৫ লাখ টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আহত হয়ে যেসব শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে আছেন তাদের চিকিৎসা নিশ্চিত করতে চিকিৎসা খরচ বহন করতে ওই পরিবহনকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একই সঙ্গে চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স কোন যোগ্যতার ভিত্তি দেওয়া হয় এবং সড়কে চলাচলকারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিআরটিএ কী পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে বিআরটিএ’কে নির্দেশ দিয়েছেন।
পরবর্তী আদেশের জন্য ১২ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়েছে। ওই দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে হবে। এছাড়া কুর্মিটোলার এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় জাবালে নূর পরিবহনের দায় নির্ধারণে তদন্ত প্রতিবেদন ২ মাসের মধ্যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) অ্যাকসিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালকের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে সহায়তা করবে পুলিশ ও বিআরটিএ বলে জানান রুহুল কুদ্দস কাজল।
রিট আবেদনে স্বরাষ্ট্র সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, ঢাকার পুলিশ কমিশনার, অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক), বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এবং জাবালে নূর পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বিবাদী করা হয়েছে।
রোববার দুপুরে হোটেল র্যাডিসনের সামনে জিল্লুর রহমান ফ্লাইওভার ঘেঁষে রাস্তার বাঁ-পাশে দাঁড়ানো শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একদল শিক্ষার্থীর উপর উঠে যায় জাবালে নূর পরিবহনের একটি বেপরোয়া বাস। এতে দুই শিক্ষার্থী নিহত হন। আহত হন আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। প্রতিবাদে তখন বেশ কিছু গাড়ি ভাঙচুর করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যে, মিরপুর-আব্দুল্লাহপুর রুটের জাবালে নূরের একাধিক বাস পাল্লাপাল্লি করতে গিয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটায়।