পৃথিবীর অনেক দেশেই হিজাব পরা ফৌজদারি অপরাধ। নেদারল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, বেলজিয়াম, স্পেন, ফ্রান্স, চাদ ও ক্যামেরুনে হিজাব পরায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নেদারল্যান্ডে মুখ ঢেকে রাখা তথা নিকাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এটিকে একটি ফৌজদারী অপরাধ হিসেবে গণ্য করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। আইন অনুযায়ী, যে কেউ বোরকা পরবে- যেটি তার পুরো মুখ এবং শরীর ঢেকে রাখে বা নিকাব যেটি জনসমাগম স্থানে শুধু মুখ ঢেকে রাখে সে ব্যক্তিকে ৪৫০ ইউরো বা ৪৭২ মার্কিন ডলার জরিমানা করা হবে।
সুইজারল্যান্ডে ১ জুলাই ২০১৬ স্কার্ফ-বোরকা-নেকাব পরিধানের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। আইন অনুযায়ী টিচিনো নামক ইটালিয়ান ভাষাভাষীর একটি স্থান যেটি দক্ষিণ সুইজল্যান্ডে অবস্থিত সেখানকার মুসলিম মহিলারা ৯,২০০ ইউরো জরিমানার সম্মুখীন হয়েছিলেন। অধিকাংশ সুইস নাগরিক সমগ্র দেশে জনসমাগম স্থানে মুখ ঢেকে রাখে এমন পর্দার উপর নিষেধাজ্ঞা চায়।
২০১১ সালে বেলজিয়াম মুখ ঢেকে রাখার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। এ আইন অনুযায়ী যে কেউ পর্দা বা এমন পোশাক যা জনসমাগম স্থানে মানুষের মুখ ঢেকে রাখে বা মুখ চিনতে কষ্ট হয় এমন পোশাক পরিধান করে সে ব্যক্তি ৭ দিনের কারাবাস অথবা ১,৩৭৮ ইউরো জরিমানার সম্মুখীন হবেন।
উত্তর-পূর্ব স্পেনের কাতালোনিয়া নামক স্থানের কিছু অংশে মুখ ঢেকে রাখে এমন পর্দার ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ২০১৩ সালে স্পেনের সুপ্রিম কোর্ট এ আইন উঠিয়ে দেয় এবং মতামত প্রদান করেন যে, ‘এটি ধর্মীয় স্বাধীনতাকে সীমিত করবে’। তবে কিছু কিছু অঞ্চলে এখনো নিষেধাজ্ঞা বহাল রয়েছে।
ফ্রান্স ইউরোপের প্রথম দেশ হিসেবে মুখ ঢেকে রাখে এমন পর্দার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এটা হয়েছিল ২০১১ সালে। এ আইন অনুসারে কোনো মহিলা যদি এ আইন ভঙ্গ করে তবে তাকে ১৫০ ইউরো জরিমানা করা হবে এবং যদি কেউ কোনো মহিলাকে তার মুখ ঢেকে রাখতে বাধ্য করে তবে তাকে ৩০,০০০ ইউরো জরিমানা করা হবে।
২০১৫ সালের জুন মাসে সেখানে পর পর দুইবার আত্মঘাতী বোমা হামলার দুদিন পরেই মুখ ঢেকে রাখে এমন পর্দা নিষিদ্ধ করে চাদ। উক্ত হামলার পরেই, দেশটির প্রধানমন্ত্রী কালজেউব ফাহিমি ডেউবেট বোরকা পুড়িয়ে দেয়ার আহ্বান জানান। বোরকা পরার দন্ড হিসেবে গ্রেফতার অথবা কারাবাসের আইন করা হয়। নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে ক্যামেরুনও মুখ ঢেকে রাখে এমন পর্দা পরিধান নিষিদ্ধ করেছে।