বিকিনি পরা যে ছবিটা সম্প্রতি ক্রোয়েশিয়ার প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডা গ্র্যাবার কিটারোভিস এর ছবি বলে ভাইরাল হয়েছে সেটা আসলে এমেরিকান মডেল কোকো অস্টিন এর ছবি!!
এর আগেও কোলিন্ডাকে এই ধরনের বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়েছে!!প্রায় এক দশক আগে একটি সার্বিয়ান ট্যাব্লয়েড এ একটা মিথ্যা রিপোর্ট ছাপানো হয় তাতে দাবী করা হয় যে প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডা একজন পর্ন অভিনেত্রী ছিলেন!! যে ছবিটি দিয়ে খবরটা ভাইরাল করা হয় তা ছিল এমেরিকান পর্ন স্টার ডায়মন্ড ফক্স এর!!
কথা সেটা না,কথা হচ্ছে যদি বিকিনি পড়া ছবিটা কোলিন্ডার হতই তাতেই বা কি আসত যেত? একজন নারীর বক্ষ নিতম্ব উন্মুক্ত ছবি দেখেই তার দেশকে সাপোর্ট করতে হবে?? কি এমন আছে ওই দুই মাংস পিন্ডে যা দেখে পাগল হয়ে যেতে হবে?
একটা মানুষের রুপ/শরীর দেখেই লজিক হারিয়ে ফেলা এটা বোধহয় বাঙ্গালীদের পক্ষেই সম্ভব!!তাদের সব ভাললাগা ভালবাসা আসলে শরীর /চেহারা কেন্দ্রিক! বিষয়টা অতি দুঃখজনক!
গুগল এ বিকিনি লিখে সার্চ দিলেই টপ স্টোরিজ এ প্রথমেই সেই ফেইক ছবিটা আসে যেটা প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডার বলে দাবী করা হয়েছে!!কারণ সবাই প্রেসিডেন্ট এর বিকিনি পরা ছবিটা সার্চ দিয়ে দেখছে!! যার কাছে জিনিসটা যত বেশী হট মনে হচ্ছে সে তত জোরে সোরে ক্রোয়েশিয়াকে সাপোর্ট করছে!
উনার আসল হটনেস সম্পর্কে কয়টা বাঙ্গালি জানে তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে!! যে তথ্যগুলা কেউ সার্চ দিয়ে জানার চেষ্টা করে নাই সেগুলো আমি বলে দেই!
১৭ বছর বয়সে কোলিন্ডা স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে মেক্সিকোতে পাড়ি জমান এবং লস এলমস স্কুল থেকে হাই স্কুল শেষ করেন এবং নিজ দেশে ফিরে আসেন!! ১৯৯৩ সালে উনিভারসিটি অফ জাগ্রেব থেকে ইংলিশ এন্ড স্প্যানিশ ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড লিটারেচারে গ্র্যাজুয়েশন কমপ্লিট করেন!
১৯৯৫-৯৬ সালে ডিপ্লোম্যাটিক একাডেমি অফ ভিয়েনা থেকে ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করেন এবং ২০০০ সালে উনি ইউনিভারসিটি অফ জাগ্রেব থেকে ইন্টারন্যাশনাল রিলেশন্স এ মাস্টার ডিগ্রী লাভ করেন!
২০০২-২০০৩ সালে উনি ফুলব্রাইট স্কলারশিপ নিয়ে আমেরিকার জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভারসিটিতে পড়তে যান এবং তার পর লাকসিক ফেলোশিপ নিয়ে পড়তে যান হারভার্ড ইউনিভারসিটির কেনেডি স্কুল অফ গভমেন্ট এ!
এছাড়াও কোলিন্ডা ভিজিটিং স্কলার হিসেবে জন্স হপকিন্স ইউনিভারসিটিতে স্কুল অব এডভান্সড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজেও পড়ালেখা করেন! ২০১৫ সালে প্রসিডেন্ট কোলিন্ডা ইউনিভারসিটি অফ যাগ্রেব এ ইন্টারন্যাশলাল রিলেশনস এ ডক্টরাল স্টাডিজ শুরু করেন!
আমাদের মুখের দাতের চেয়ে যার ডিগ্রী বেশী তার বিকিনি পড়া ছবি নিয়ে আমাদের কত ফ্যান্টাসি! আসলে উনাকে নিয়ে ফ্যান্টাসি করতেও যে একটা যোগ্যতা লাগে সেইটা আমরা বুঝিই না!! আমরা মানুষের রেস্পেক্ট একদমই বুঝি না!
চেহারার প্রতি মানুষের দুর্বলতা ধ্রুব সত্য বিষয়! এটা উপেক্ষা করার কোন উপায় নেই!!নারী শরীরের প্রতি আকর্ষন আরো ধ্রুব!!কিন্তু যখন একজন মানুষের বিকিনি পরা ছবির উপরে কোন ফুটবল টিমকে সাপোরট করা নির্ভর করে তখন তা সত্যিই ভীতিকর!! এখন বুঝি হেলেন এর কারনে ট্রয় নগরী কেন ধ্বংস হয়েছিল!
প্রেসিডেন্ট কোলিন্ডা সত্যিই হট!!তার আরলি লাইফ,এডুকেশন,তার রাজৈতিক ক্যারিয়ার যে কত রোমাঞ্চকর তা বিকিনি থেকে আরেক্টু উপরে উঠে কোলিন্ডার ব্রেইন এর দিকে তাকালেই বোঝা যেত! কিন্তু আফসোস,বাঙ্গালির সৌন্দর্য বোধ আর ভালবাসা মেয়েদের বক্ষ, নিতম্ব আর গায়ের রং এ আটকে গেছে…. (লেখাটি লেখিকার ফেসবুক প্রোফাইল থেকে নেওয়া হয়েছে)