অ্যান্টিগায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম টেস্টে দেশটির বিরুদ্ধে ৪৩ রানে অলআউট হওয়ার পর বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভক্তদের একটা বড় অংশ শোকে মুহ্যমান। অন্যদিকে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে সেই শোকের পাশাপাশি চলছে হাসিঠাট্টা ও বিদ্রূপের ঝড়।
৪৩ রানে অলআউট টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন স্কোর। সবচেয়ে কম বল খেলে একটা ইনিংসে সবাই আউট হওয়ার বিশ্বরেকর্ডও আর একটু হলেই তাদের দখলে চলে আসত। মাত্র এক বল বেশি খেলে তারা সেই লজ্জা থেকে রক্ষা পেয়েছে।
বাংলাদেশের তারকা ক্রিকেটাররা কীভাবে সবাই একসঙ্গে এভাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাতে নাস্তানাবুদ হলেন, তার নানা ব্যাখ্যা সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঘুরছে। কোনোটা সিরিয়াস ব্যাখ্যা, কোনোটা আবার ব্যঙ্গ করে। তাদের একজন এস এম আমিনুল রুবেল।
ফেসবুকে পোস্টে রুবেল লিখেন, ‘ওদের বদলে মেয়েদের পাঠালেও ইজ্জত বাঁচত।’ বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটাররা সম্প্রতি দারুণ সাফল্য পেয়েছেন। কুয়ালালামপুরের ফাইনালে ভারতকেও হারিয়েছেন তারা।সম্ভবত সেটা মাথায় রেখেই তিনি বলতে চাইছেন, ওয়েস্ট ইন্ডিজে সাকিব-তামিমদের বদলে জাতীয় নারী দলকে পাঠানো হলে তারা কখনোই এতটা খারাপ করত না!
আরিক আনাম খান নামে অপর একজন লিখেন, ‘ভাগ্যিস বিশ্বকাপ চলছে। তাই বাংলাদেশের এই টেস্টের কথা কেউ মনেই রাখবে না!’ ফুটবলের এই মৌসুমে বাংলাদেশ বোধহয় ভেবেছিল, এই ম্যাচটাও ৯০ মিনিটের। তাই পুরো ৯০ মিনিট তারা ব্যাটিং করেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন।
শামসুল হক রাসেলের ভাষ্য, ‘ফুটবলের সিজনে ক্রিকেট খেললে তো এমনই হবে।’ গীতিকার রবিউল ইসলাম জীবন আবার ছড়া কেটে বলেন, ‘বাংলাদেশের নতুন কোচ বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজের কেমার রোচ!’
কেমার রোচের খুনে বোলিংয়েই ধসে পড়েছিল বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের টপ অর্ডার। আর সেই শোকগাঁথার একটা নামকরণও করেছেন তিনি। তার ভাষ্য, ‘এ কেমন ইতিহাস ৪৩/১০!!’
জনি হক নামের একজনের মন্তব্য ছিল, ‘উরুগুয়ে বনাম ফ্রান্সের কোয়ার্টার ফাইনাল দেখার সুযোগ কোনোভাবেই হাতছাড়া না হয়, সে জন্যই নাকি বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা মরিয়া ছিলেন!’
বিশ্বকাপের ওই ম্যাচ শুরু হওয়ার আগেই যাতে অ্যান্টিগা টেস্ট শেষ করে দেওয়া যায়, বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা সে চেষ্টাতেই আছেন বলে ব্যঙ্গ করছেন জনি।
ফেসবুকে সুমন সাহা নামের একজন আবার ক্রিকেটারদের সাবধান করে দিয়ে লিখেছেন, ‘হারলেও বাংলাদেশ, জিতলেও বাংলাদেশ। খেলায় মন দেন খেলোয়াড়বৃন্দ। খেলায় হারলে ভোটেও হারবেন!’ ‘অপরাধী গেয়ে হিট করানোর লোক যে অনেক আছে’, সেটাও মনে করিয়ে দিতে ভুলেননি সুমন।
এই ব্যাটিং বিপর্যয়ের মধ্যেও কিছুটা সান্ত্বনার আলো খুঁজে পাচ্ছেন জেরিন হোসেন। তিনি নিজের ওয়ালে পোস্টে লিখেন, ‘বাংলাদেশের সর্বনিম্ন টেস্ট স্কোর যেখানে ৪৩ (বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ২০১৮), সেখানে ভারতের সর্বনিম্ন টেস্ট স্কোর ৪২ (বনাম ইংল্যান্ড, ১৯৭৪)।’
চুয়াল্লিশ বছর আগে অজিত ওয়াড়েকরের ক্যাপ্টেন্সিতে ইংল্যান্ড সফরে গিয়ে তখনকার ভারতীয় দলও মাত্র ৪২ রানে সবাই আউট হয়ে গিয়েছিল। ভারতের চেয়ে বাংলাদেশ যে এখানে মাত্র এক রানে হলেও এগিয়ে আছে, জেরিন হোসেনের মতে সেটাই সান্ত্বনা!