তাসফিয়া হত্যা : যুবলীগ নেতা ফিরোজ কারাগারে

নগরের সদরঘাট থানার কদমতলী এলাকার পরিবহন ব্যবসায়ী ও যুবদল নেতা মো. হারুনুর রশীদ হত্যা মামলায় পুলিশ যুবলীগ কর্মী এহসানুল কবির মেহেদীকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে। গতকাল মঙ্গলবার নগরের মোগলটুলী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

সদরঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. নেজাম উদ্দিন জানান, মেহেদীকে গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখানে মেহেদী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেছেন।

ওসি বলেন, ‘ঘটনার ভিডিও ফুটেজে হত্যাকাণ্ডে মেহেদীর অংশ নেওয়ার প্রমাণ রয়েছে। এ ছাড়া এই মামলায় আগে গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরাও আদালতে মেহেদীর নাম প্রকাশ করেছিল।’

২০১৭ সালের ৩ ডিসেম্বর বিকেলে কদমতলী এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের মিছিল শেষে যুবদল নেতা হারুনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহত হারুনের ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত হারুন ছিলেন চট্টগ্রামের বিএনপির প্রয়াত নেতা দস্তগীর চৌধুরীর ভাইপো।

স্কুলছাত্রী তাসফিয়া হত্যা : মামলার আসামি যুবলীগ নেতা নামধারী মো. ফিরোজ আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। আদালত তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত জেলা সেশন জজ ও তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. আবদুল মজিদের আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। আদালত শুনানি শেষে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত ২ মে নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়া আমিনের মরদেহ পাওয়া গিয়েছিল পতেঙ্গা সৈকতে। পতেঙ্গা থানা পুলিশ মামলাটি তদন্ত করছিল। পরে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান মামলাটি তদন্তের জন্য নগর গোয়েন্দা পুলিশকে দায়িত্ব দেন।

ফিরোজকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা সেশন আদালতের পেশকার কাজল চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘তাসফিয়া হত্যা মামলার আসামি ফিরোজ উচ্চ আদালতে জামিন চেয়েছিল।

আদালত তাঁকে জামিন না দিয়ে জেলা সেশন জজ আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দেন। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুসারে ফিরোজ মঙ্গলবার আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।’

ঘটনার আগের দিন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী তাসফিয়া ছেলেবন্ধু ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শিক্ষার্থী আদনানের সঙ্গে দেখা করতে বের হয়েছিল। তারা গোলপাহাড় মোড়ের একটি রেস্টুরেন্টে বসেছিল।

সেখান থেকে বের হয়ে একটি অটোরিকশা নিয়ে বাসায় যাওয়ার কথা ছিল তাসফিয়ার। কিন্তু তাসফিয়া বাসায় যায়নি। পরদিন তার মরদেহ পাওয়া যায় পতেঙ্গা সৈকতে।

এই ঘটনায় তাসফিয়ার বাবা বাদী হয়ে আদনানসহ তার বন্ধুদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় আদনানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার আসামিদের মধ্যে শিক্ষার্থী ছাড়াও যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত মো. ফিরোজকেও আসামি করা হয়েছিল।

শেয়ার করুন: