রাজধানী সহ সারাদেশে ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রত্যাশী চালকের সংখ্যা বাড়ছে। এই সংখ্যাকে পুঁজি করে লাইসেন্স করার জন্য বিআরটিএ কর্মকর্তা কর্মচারী বসিয়েছে তদবির ব্যবসা।
তবে তদবিরেই মিলছে লাইসেন্স। ভুক্তভোগীদের দাবি, তদবির ছাড়া সরকারি চাকুরী মিলবে তবে মিলছে না ড্রাইভিং লাইসেন্স। বৃহস্পতিবার জোয়ার সাহারা ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা কেন্দ্রে সরেজমিনে এমন চিত্র দেখা যায়। খবর বার্তা ২৪’র।
লাইন্সেস পেতে ছয় মাস পূর্বে পরীক্ষা নির্ধারিত ছিলো। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৬০০ বেশি। অপেশাদার মোটর সাইকেল, হালকা যান ও পেশাদার ভারি যানবাহন চালকরা এসেছেন পরীক্ষা দিতে।
প্রবেশপত্রে পরীক্ষার সময় ৯ টা থাকলেও, কেন্দ্র বিআরটিসি এই ডিপোর খুলে দেওয়া হয় সোয়া ৯টায়।
পরীক্ষা কেন্দ্রের নিরাপত্তা প্রহরী জামিল বলেন, তদবির ছাড়া গেলে লাভ নাই, এখনও সময় আছে ৪ হাজার টাকায় অপেশাদার লাইসেন্স করে দিবো।
পরে জামিল বলেন, তদবির ছাড়া একটারও হবে না, লিখিত পরীক্ষায় বাদ দিয়ে দিবে। কার সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে-জানতে চাইলে বলেন, ভিতরে যান বুঝতে পারবেন। সবাই বসে আছে।
ভিতরে প্রবেশ করেই বিশৃঙ্খল ভাবে ছুটতে থাকে যে যার মতো, নোটিশ বোর্ডে সিরিয়াল মিলিয়ে, স্বাক্ষর করে পরীক্ষার রুমে। ৬ ব্যাচে পরীক্ষা হবে। ব্যাচ প্রতি ১০০ জন।
পরীক্ষা রুমের গার্ড বিআরটিএ কর্মচারী মোস্তফা কামাল আলাদা করে বসিয়ে দিচ্ছেন পরীক্ষার্থীদের। ২০ মিনিট পরীক্ষার ৫ মিনিট পর উত্তরপত্র দিয়ে দিলেন মোস্তফা। তদবির করে আসা লাইসেন্স প্রত্যাশীরা দেখে দেখে পরীক্ষা দিচ্ছেন। বাকীরা মাথা চুলকিয়ে হিসাব করছে ইঞ্জিনে প্যাগের ব্যবহার কী?
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শান্ত বলেন, তদবির ছাড়া সরকারি চাকুরী মিলতে পারে। তবে আমি নিশ্চিত ড্রাইভিং লাইসেন্স মিলবে না।
শান্ত ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের দোষ আমরা তাদের ঘুষ খাবার সুযোগ করে দিচ্ছি। এখানে আসা প্রত্যেকটা মানুষ দালালকে ধরে এসেছে। কেউ ৫ হাজার কেউ ৮ হাজার করে টাকা দিয়েছে। এদিকে ১ ঘন্টাপর পরীক্ষার ফলাফলে প্রথম ধাপে পাশ করেন ৪০০ জন। বাকী ২০০ ভিড় করেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অফিসে।
দ্বিতীয় ধাপে পাশ করা রক্তিম খাঁন বলেন, আমি ২ টা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছি, আর পারি নাই। তাই হয়তো ফেল করেছি। অফিস রুমে কথা বলে ৫০০ টাকা দিয়ে পাশ লিখে নিলাম।
বাকি থাকলো শেষ ধাপ ব্যবহারিক। চেষ্টা থাকবে টাকা না দিয়ে পাশ করার। কিন্ত উপায় নাই। আমরা যাদের ভিআইপি বলি তারাও এখানে ধরা, আমি তো সাধারণ মানুষ। সার্বিক বিষয়ে উপস্থিত দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে, ‘দুপুরের খাবার খেতে যাবেন বলে কৌশলে এড়িয়ে যান।