অনেকেই বলে থাকেন, যান্ত্রিক এই ঢাকা শহরে বসবাস করা মানেই বন্দি জীবনযাপন। ইট পাথরের আকাশচুম্বি দালানের মধ্যে থাকতে থাকতে জীবন বিষন্ন।
আর তাই শত ব্যস্ততার মাঝে নিজের এবং পরিবারের প্রশান্তির জন্য শহরের পার্ক গুলোতে ছুটে যায় নগরীর মানুষ। কিন্তু শান্তি যে সেখানেও নেই। কারণ পরিবার পরিজন নিয়ে এসব পার্কে ঘুরতে আসা অভিভাবকরা পড়ে যান বিপাকে।
আপনাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে বিপত্তিটা কোথায়? উত্তরে বলবো ‘উঠতি বয়সী তরুণ তরুণীদের অবাধ মেলামেশা।’ তবে স্বচক্ষে দেখলে আপনাদের মনেও প্রশ্ন জাগবে- এর নাম কি বিনোদন কেন্দ্র?
বলছি রাজধানীর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা ধানমন্ডি লেকের কথা। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, সকাল থেকেই বিভিন্ন স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই লেকে ভিড় জমায়।
অবশ্য শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি মধ্য বয়সী লোকেরাও আসেন এই পার্কে। কেউ করেন শারীরিক ব্যায়াম আবার কেউবা বন্ধুদের নিয়ে খুনসুটিতে মেতে থাকেন।
লেকে ঘুরতে আসা ইডেন কলেজের শিক্ষার্থী আয়শা আক্তার বলেন, ‘লেকে আসাতো কোনো দোষের না। পড়ালেখা শেষে একটু ঘুরতে বের হওয়া। সময় পেলেই আমরা বন্ধুরা ধানমন্ডি লেকে ঘুরতে চলে আসি। আড্ডা দিয়ে চলে যাই। বিভিন্ন দিবসের দিনতো এখানে পা ফেলার জায়গাও পাবেন না।’
তবে পশ্চিম আকাশে নীলিমামাখা সূর্য যখন হেলে পড়ে তখন একদল শিক্ষার্থী (তরুণ তরুণী) আপনাদের মনোযোগ আকর্ষণ করবে। আবার যখন সন্ধ্যার আলোই আধাঁর খেলা করবে তখন এখানে যৌবন সৃষ্ট নির্লজ্জ বেহায়পনা চুম্বনের দৃশ্যের খেলা শুরু হয়। এসময় তারা ভুলে যায় পাশ দিয়ে কেউ হেটে যায়। লজ্জা নামক শব্দটাও তাদের কাছে তখন অপরিচিত হয়ে যায়।
ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের এক যুগল প্রেমিক-প্রেমিকা বলেন, ‘আমরা সব সময়তো এখানে আসি না। সময় পেলে সন্ধ্যার দিকে একটু হাটতে আসি। এইতো, আর কিছু না।’
রাজধানীর ধানমন্ডি-৩২ থেকে শুরু করে ঝিগাতলা পর্যন্ত এই লেকের অবস্থান। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল থেকে রাত পর্যন্ত ধানমন্ডি লেকে ঘুরে দেখা যে, জাহাজ বাড়ির অপর পাশে অবস্থিত ব্রিজে সন্ধ্যা থেকে রাত আটটার পড়েও তরুণ তরুণীরা একে অপরকে জড়িয়ে ধরে নানা অশালীন কাজ করছেন।
পার্কে ঘুরতে আসা এক দর্শনার্থীতো প্রশ্ন করেই বসলেই ‘প্রেমের নামে কি হচ্ছে লেকে?’ তিনি বলেন, ‘পরিবার নিয়ে একটু শান্তির খোঁজে এখানে আসি। এমন দৃশ্য ছেলে মেয়েরা দেখলে কি মনোভাব সৃষ্টি হবে তাদের ভেতরে? প্রশাসনের কাছে তিনি আবেদন করেন যেন এ ব্যাপারে নজর দেন।’
এ ব্যাপারে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) মোবাইল নম্বরে ফোন দেয়া হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। তবে জানা গেছে, পুলিশ মাঝে মধ্যে এখানে অভিযান চালায়। কিন্তু সেটাও আবার কিছু সময়ের জন্য।