বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) মিজানকে তার গুলশানের বাসা থেকে আটক করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ— তিনি গাজীপুর নির্বাচনে নাশকতার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। এ সংক্রান্ত কয়েকটি অডিও ক্লিপ জব্দ করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে গুলশান ১ নম্বরের ৮ নম্বর সড়কের ১০ নম্বর বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়। এর আগে রাত ১টা থেকে তার বাসা সাদা পোশাকে ও ইউনিফর্ম পোশাকে থাকা পুলিশ ঘিরে রাখে। বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদার এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘থানা পুলিশ তাকে আটক করেনি। ডিবি পুলিশের একটি অভিযান ছিল। তারা আটক করতে পারে।’
রাতে যখন ডিবি পুলিশের সদস্যরা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মিজানকে আটক করতে তার বাসায় যান, তখন বিএনপি'র এই নেতাকে ফেসবুকে লাইভে দেখা গেছে।
সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পরেছে। ভিডিওতে দেখা যায়, তার বাসার ভেতরে চিৎকার চেচামেচি করছে নারী কণ্ঠ। দরজার সামনে সাদা পোশাকে কয়েকজন ব্যক্তি মোবাইলে কথা বলছিলেন। মিজানের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা আছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
কন্সপেরেসি লিক নামক একটি ইউটিউব চ্যানেলে মেজর (অব.) মিজানের কথপোকথনের একটি অডিও প্রকাশ করা হয়েছে। গোয়েন্দা সূত্রে ওই অডিও ক্লিপটি যে মেজর অব. মিজানের তা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
স্লামালাইকুম মেজর মিজান: ওয়ালাইকুম সালাম। কেমন আছো? -আছি মোটামুটি।
মেজর মিজান: আচ্ছা, তোমাদের এখান থেকে যে কাশিমপুর ইউনিয়নের যে ভোটকেন্দ্র, কতটুক দূর?
- মানে আমাদের পাশেরডা হইলো ১ নম্বর ওয়ার্ড।
মেজর মিজান: হ্যাঁ, এটা তোমাদের এখান থেকে কতটুকু দূর ভোটকেন্দ্রটা?
- এই ১৮ কিলো হইবো। এক নম্বর ওয়ার্ডে কেন্দ্র হইলো তিনটা
মেজর মিজান: আচ্ছা, ওখানে তোমাদের ক্লোজ বন্ধু-বান্ধব আছে?
- হ্যাঁ
মেজর মিজান: আচ্ছা, এখানে আমাকে ১টা ছেলে পাড়লে ২টা ছেলে দাও। জারা আওয়ামী লীগের ব্যাচ লাগিয়ে ঘুরতে পারবে। এরকম কিছু ছেলে ম্যানেজ করতে পারবা?
- হ্যাঁ এরকম আছে।
মেজর মিজান: আছে? প্রয়োজনে আওয়ামী লীগের লোক নাও, যারা মনে মনে বিএনপি। আছে এমন?
- জি আছে।
মেজর মিজান: তিনটা ছেলে সিলেক্ট করো। তিনটা ছেলে সিলেক্ট করো, হ্যাঁ? ওরা নৌকার ব্যানার নিয়ে ঘুরবে । ওদের আমি বলে দেবো। ওদের টাকা-পয়সা দিয়ে দেবোনে। আমি ইলেকশানের দিন যন্ত্রপাতি দিয়ে দিবোনে। তুমি ছেলে তিনটা আগে সিলেক্ট করো। তিন সেন্টারের জন্য তিনজন। ওকে?
-ওকে?
মেজর মিজান: ওকে। শোনও শোনও শোনও শোনও। যে পোলিং সেন্টারটা, মানে যেকোনও তিনটা পোলিং সেন্টারের যেকোনও একটা সেন্টারের পাশে আমাদের লোকের বাড়ি থাকতে হবে। যে বাড়ির জানালার পাশে বসে.. দোতলা কিংবা তিনতলা বাড়ি থাকলে ভালো হয়।
-আমি রেডি করবোনে ।
মেজর মিজান: হ হ রেডি করো, আর তিনটা ছেলেকে রাখবা, অন্য কাজে। ওই তিনটা ছেলে আওয়ামী লীগের ব্যাচ লাগিয়ে ঘুরবে।
- আচ্ছা, ঠিক আছে।
মেজর মিজান: আচ্ছা ঠিক আছে।
(বি. দ্র. অডিওতে মেজর অব. মিজানের কণ্ঠ নিশ্চিত হলেও অন্য প্রান্তের কণ্ঠটির পরিচয় সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেননি গোয়েন্দারা)