সহকর্মী বারবার বুকের দিকে তাকান, যা জানালেন তিন নারী

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল, গণপরিবহন, আবাসন, বিনোদনব্যবস্থা প্রভৃতি সূচকের আলোকে যাচাই করা যায় একটি শহর নারীর জন্য কতটা অনুকূল ও নিরাপদ। এসব জায়গায় নারীদের অনেক ধরনের অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়। সব ঘটনাকে আবার ক্রাইম বলে প্রমাণও করা যায় না।

২০১৪ সালে ভারতের জনপ্রিয় নায়িকা দীপিকা পাড়ুকোন ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে একটি টুইট করেন। দীপিকার সেই টুইট নিয়ে ভারতীয় মিডিয়ায় তোলপাড় শুরু হয়েছিল।

দীপিকা সেই টুইটে বলেছিলেন, ‘হ্যাঁ! আমি একজন নারী। আমার স্তন আছে এবং স্বাভাবিক ভাবেই তার ক্লিভেজও আছে। আপনার কোনো সমস্যা!!?? নারীদের ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলবেন না যখন আপনারা নারীদের সম্মানই করতে জানেন না!’ বর্তমানে ভারতে দীপিকার মতো করে ভাবেন এমন নারীর সংখ্যা কম নয়। আর শুধু উচ্চস্তরের নারীরাই এমনটা ভাবেন এমন নয়।

যে নারীরা পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাধঁ মিলিয়ে পাথর ভাঙেন বা অন্য কোনো কায়িক শ্রম করেন তারাও ক্লিভেজ নিয়ে মাথা ঘামান না। কাজের ফাঁকে কোমর বা বুকের দিকে তাকানোর দায়টা বিকৃত মনের পুরুষের, নারীদের নয়।

কিন্তু অফিস বা কর্মস্থলে যারা কাজ করেন সেখানের সমীকরণ একটু অন্য রকম। কর্মস্থলে একজন পুরুষ সহকর্মী বারবার যদি নারী সহকর্মীর বুকের দিকে তাকান, সেই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি থেকে একজন নারী তাকে কীভাবে বাঁচাবেন? এই অভিযোগটি এমন যে তথ্য দিয়ে প্রমাণ করা যায় না।

অভিনেত্রী অনন্যা বিশ্বাস বললেন, ‘আমি যা বলি, মুখের উপর বলি। কথা বলার সময় যদি কেউ আমার সঙ্গে এ ধরনের কাজ করে, তাহলে আমি তাকে সরাসরি বলব আপনি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলুন।

এরপরও ওই ব্যক্তি কথা না শুনলে, তবে কথা শেষ হওয়ার আগেই আমি ওই জায়গা থেকে চলে যাব। আর তাকে জানিয়ে দেবো তার সঙ্গে কাজ করা সম্ভব না। সে যেই হোক।’

সঙ্গীতা দাস একজন জনসংযোগ কর্মী। তিনি জানান, কর্মস্থলে তার সঙ্গে এমনটা অসংখ্যবার ঘটেছে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় এমন পরিস্থিতিতে সরাসরি বলে দেওয়া উচিত। অামার বর্তমান কর্মস্থলে এমন কিছু ঘটেনি তবে আগের অফিসে এরকম ঘটনা ঘটেছে। আর সেখানে অামি স্পষ্ট ভাষায় আমার বিরক্তির কথা জানিয়েছি।’

এদিকে অভিনেত্রী লাবণী ভট্টাচার্য সম্পূর্ণ অন্যভাবে বিষয়টি দেখছেন। এই অভিনেত্রী মনে করেন, যুক্তি, এথিকস, মেয়েদের সম্মান দেওয়া এগুলো সব পুরুষ সহকর্মীদের জানা। তারপরও বারবার একই ঘটনা ঘটতে থাকে। তাই অন্যভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে।

লাবণী ভট্টাচার্য বলেন,‘কেউ যদি কথা বলতে বলতে বারবার এমনটা করে, তাহলে আমি কিচ্ছু না বলে, হাঁটু মুড়ে নিচু হয়ে যাব, তাহলে তার চোখের সামনে আমার চোখটা এসে যাবে। নিশ্চয়ই তখন সে বুঝতে পারবে। একবারে না বুঝলে, বারবার এমনটা করব এবং হাসতে হাসতে করব। তার পরে নিশ্চয়ই তার একটু লজ্জা করবে।’

শেয়ার করুন: