চট্টগ্রামে রহস্যজনকভাবে খুন হওয়া সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসফিয়ার শরীরে ১১টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। মৃত্যুর আগে তার নাক দিয়ে সাদা ফেনা নির্গত হয়। খুন করার আগে তাসফিয়ার চোখ দুটি মারাত্মকভাবে থেঁতলে দেয়া হয়। দুটি চোখই ছিল রক্তমাখা। ডান চোখের ভ্রুও ছিল ক্ষতবিক্ষত। দুটি চোখই ছিল অস্বাভাবিক ফোলা। চট্টগ্রাম আদালতে দাখিল করা কিশোরী তাসফিয়ার লাশের সুরতহাল প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সুরতহাল প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, পাঁচ ফুট দুই ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের কিশোরী তাসফিয়ার মুখমণ্ডল রক্তমাখা ছিল। কপালে ছিল জখম। দুই হাতের দুই পাশে ভাঁজ ছিল। দুই হাতের দুই নখ ছিল নীল বর্ণ।
থুঁতনি থেঁতলানো ও রক্তমাখা ছিল। দুই হাঁটুর নিচে থেঁতলানো জখম ছিল। তার পুরো শরীর ছিল ভেজা। কিশোরী ধর্ষিত হয়েছে কি-না তার জন্য পোস্টমর্টেম প্রয়োজন বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছেন পতেঙ্গা থানার এসআই আনোয়ার হোসেন। তিনিই চাঞ্চল্যকর এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা।
এ ব্যাপারে এসআই আনোয়ার বলেন, তাসফিয়ার শরীরের বিভিন্ন অংশে জখমের আলামত পাওয়া গেছে। খুনিরা খুন করার আগে অমানুষিক নির্যাতন করেছে। এসব খুনেরই আলামত। এ মামলায় অনেক দূর অগ্রগতি হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ও মোবাইল কললিস্ট পেলে একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছানো যাবে। বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগর শিশু আদালতে তাসফিয়া হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত আদনান মির্জার সাত দিনের রিমান্ডে নেয়ার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১ মে তাসফিয়া নগরীর ও আর নিজাম রোডের বাসা থেকে বেরিয়ে একটি রেস্টুরেন্টে বন্ধু আদনানের (১৬) সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে আর ফিরে আসেনি। পরে ২ মে নগরীর পতেঙ্গায় নদী তীর থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জা ও মিজানুর রহমান ওরফে আসিফ মিজানকে গ্রেফতার করতে পেরেছে পুলিশ।
এর আগে পুলিশ রহস্য উন্মোচনের খুব কাছাকাছি চলে যাওয়ার দাবি করলেও ঘটনার এক মাস হতে চললেও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
এ মামলার অপর আসামিরা হলো- সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র শওকত মিরাজ, আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রি কলেজের এইচএসসির ছাত্র ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম, কথিত যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ ফিরোজ ও তার সহযোগী সোহায়েল ওরফে সোহেল। এই চার আসামি ঘটনার পর থেকে পলাতক।