ওঝার ঝাড়ফুঁক – ঝাড়ফুঁকের ১৭ ঘন্টা পর সাপে কাটা এক যুবক মারা গেছেন। ওই যুবক ফরহাদ মোল্লা (৩০) মঙ্গলবার (২২ মে) ভোর রাতে মারা যান। তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোপালপুর চরের বাসিন্দা লালু মোল্লার ছোট ছেলে।
এলাকাবাসী জানিয়েছে, সোমবার (২১ মে) বেলা ১১টার দিকে পার্শ্ববর্তী মাঠে গরু চরাতে গেলে সাপ কামড় দেয় ওই যুবককে। পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা তাকে প্রথমে আমীরের ব্রিজ এলাকায় এক ওঝার বাড়িতে নিয়ে ঝারফুক দেয়।
পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলেও চিকিৎসা না করিয়েই ফিরিয়ে নিয়ে আসেন স্বজনরা। সেখান থেকে তাকে নিয়ে বাদুল্লা মাতুব্বরের ডাঙ্গী গ্রামে রোগীর এক নিকট আত্মীয়ের বাড়িতে রেখে পুনরায় বিভিন্ন ওঝা দিয়ে চলে ঝাড়ফুঁক।
রাতে রোগীর কাছে থাকা প্রত্যক্ষদর্শী মানিক শেখ (২৫) জানান, ভোর রাত ৪টার দিকে ফরহাদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় এবং কিছু সময় পর তিনি মারা যান।
খবর পেয়ে সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুন নাহার ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এজিএম বাদল আমিন নিহতের বাড়িতে যান এবং তার পরিবারে প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
ঘটনাটি মর্মান্তিক ও দুঃখজনক উল্লেখ করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুন নাহার বলেন, বর্তমানে আমাদের উপজেলা হাসপাতাল ছাড়াও চারটি ইউনিয়নের নয়টি কমিউনিটি ক্লিনিকে বিষাক্ত সাপে কামড়ানোর এ্যন্টি ডট ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে এবং সংশ্লিষ্টদের মাধ্যমে প্রচারণাও চলছে। ওঝা দিয়ে ঝাড়ফুঁক না করে সাপে কামড়ানো রোগীকে দ্রুত হাসপাতালের চিকিৎসকের স্মরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
উল্লেখ্য, ঘটনার দিন ওঝার বাড়িতে গিয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপস্থিত সাংবাদিকরা রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিলে রোগীর স্বজনরা তাতে তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন-
‘আমরা লোকমুখে শুনেছি এর আগে যেসব সাপে কাটা রোগীকে হাসপাতালে ইনজেকশন দিছে তারা মারা গেছে, আমার ছেলেরে আমরা ইনজেকশন দিতে দিমু না।’
এ ব্যাপারে চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, সাপে কামড়ানো রোগীকে হাসপাতালে আনার পর আমি চিকিৎসা দিতে গেলে স্বজনরা অস্বীকৃতি জানান।
রোগীর বিভিন্ন উপস্বর্গ, ক্ষতস্থান ও পূর্বের রোগীর অবস্থা দেখে ওই যুবকে বিষধর রাসেল ভাইপার কামড়িয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয়ভাবে ওই সাপটি চন্দ্রবোরা নামে পরিচিত।