কোটা বাতিলের ঘোষনার পরেও- সরকারি চাকরিতে কোনো কোটা থাকবে না বলে ঘোষণা দিয়েছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর মুখ থেকে এই কথা শুনার পরই আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন চাকুরি প্রত্যাশীরা। এবার এর মুল কারণ জানালেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ও টকশোর পরিচিত মুখ ড. আসিফ নজরুল। তিনি এই বিষয়ে বিস্তারিত বললেন নিজের ফেসবুক পেইজে।
কোটাসেখানে লেখা আছে, দোষ কার? প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষনা দেয়ার পরেও কেন আন্দোলন হচ্ছে? এ প্রশ্ন তুলে আন্দোলনকারীদের হুমকি দেয়া হচ্ছে এবং তাদের সম্পর্কে কুৎসা রটনা করা হচ্ছে। আমি মনে করি এই প্রশ্ন তোলাটাই বরং উদ্দেশ্যমূলক এবং অন্যায়। আমার এই মন্তব্যের কারণ ব্যাখ্যা করছি নীচে।
১. প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য কোনো আইন নয়। তিনি একশবার কোনো কথা বললেও তার কোনো কার্যকারিতা থাকবে না, যতোক্ষন পর্যন্ত এর পক্ষে কোনো লিখিত আইন, বিধি, আদেশ, সিদ্ধান্ত বা প্রজ্ঞাপন জারী করা না হবে। তিনি সত্যিই কোটা বাতিল বা সংস্কার করতে চাইলে প্রজ্ঞাপন জারী করতে বা কমপক্ষে এর লক্ষে কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিতে এতো দেরী কেন?
২. প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিলের ঘোষনা দেয়ার পরেও বিভিন্ন মন্ত্রী এবং কালকে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা ভিন্ন কথা বলেছেন। তাদের কথায় কোটা নিয়ে আসলে কি হবে বা কবে হবে তা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী কোটা বাতিল করে দিলে তারা ভিন্ন কথা বলেন কিভাবে? তারা কি প্রধানমন্ত্রীর অবাধ্য? নিশ্চয়ই না। তাহলে তাদের কথার পর প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসের মূল্য কতোটুকু থাকে?
৩. কোটা সংস্কার আন্দোলনকে শিবিরিকরনের নতুন উদ্যোগ দেখে এ’নিয়ে সরকারের নিয়ত সম্পর্কে উদ্বেগ সৃষ্টি করতে পারে। কোটা বাতিল ঘোষনা করার পর ছাত্রলীগ আনন্দ মিছিল করেছে। তাহলে নতুন করে এই প্রচারণার কি ভিত্তি থাকতে পারে?
৪. ছাত্রশিবিরের কেউ কেউ কোটা সংস্কার আন্দোলনে হয়তো থাকতে পারে। কিন্তু এ’নিয়ে ঢালাও গালাগালি তো কোনো সমাধান না! তাদের অংশ নেয়া বন্ধ করতে চাইলে জামাত-শিবিরকেে নিষিদ্ধ করুন এবং এই মর্মে একটি আইন করুন যে জামাত শিবিরের কেউ ন্যায়সংগত কোনো আন্দোলনেও অংশ নিতে পারবে না এবং তাদের কোনো বাকস্বাধীনতা থাকবে না। এ’ধরনের কোনো পদক্ষেপ না নিতে পারলে অযথা চেঁচামেচি করে তো কোনো লাভ নেই। মানুষ এখন অনেক সচেতন। যুক্তি দিয়ে নিজের অবস্থানকে বিজয়ী করুন। গালাগালি, হুমকি, মিথ্যেচার দিয়ে নয়।