ইয়াবা

নারীর ইয়াবা আসক্তি, গন্তব্য পতিতাবৃত্তি!

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইয়াবা আসক্ত নারীরা মাদকের খরচ যোগাতে ইয়াবা পাচার কিংবা বিক্রেতা হয়ে উঠছেন। একই সাথে খুব দ্রুত নিজের অজান্তেই তারা পতিতাবৃত্তিতেও জড়িয়ে পড়ছেন। সম্প্রতি গোয়েন্দা পুলিশ সূত্রে এসব ভয়ঙ্কর তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, ছেলেবন্ধুর সাথে কৌতুহলী হয়ে অনেক ভালো পরিবারের মেয়েরাও প্রাণঘাতি মাদক ইয়াবায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন। আবার মুটিয়ে যাওয়া শরীর শুকোতে ইয়াবা কাযকর এ ধরণের ভ্রান্ত ধারণায় বশবর্তী হয়ে অনেক সম্ভ্রান্ত পরিবারের গৃহবধূরাও এ নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ছেন। এই ভয়ঙ্কর নেশাদ্রব্যে আসক্তি একটি মানসিক ব্যধিও বটে।

মানসিক ব্যধির কারণে একাধিক যৌনসঙ্গ গড়ে উঠে। পরে লজ্জা কেটে যাওয়ায় ওইসব নারী আমাদের সমাজে হয়ে উঠছে মাদক বিক্রেতা অথবা পতিতা।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, বর্তামানে সারা দেশে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা প্রায় ৬ লাখ। তার মধ্যে ইয়াবায় আসক্ত কমপক্ষে ৩৫ শতাংশ। ১৬ থেকে ৭০ বছর বয়সী পর্যন্ত নারীরা ইয়াবায় আসক্ত হচ্ছেন।

এর মধ্যে নারী শিক্ষার্থীও রয়েছেন। এসব শিক্ষার্থীদের বয়স ১৭ থেকে ২৮-এর মধ্যে। এদের বেশির ভাগই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া। রাজধানী কিংবা দেশের বড় শহরগুলোতে যেসব নারী গ্রামাঞ্চল কিংবা অন্য শহর থেকে পড়ালেখা কিংবা চাকরির প্রয়োজনে অবস্থান করেন

তারা ভাগ্য বিড়ম্বনায় এ ভয়াবহ মাদকে আসক্ত হয়ে জীবন থেকে ছিটকে পড়ছেন। পরবর্তীতে তারা মাদক ব্যবসায়ী কিংবা হাই সোসাইটির স্কট এমনকি রাস্তায় দাড়িয়ে খদ্দের খোঁজা গণিকা হয়ে পড়েন।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর বিভাগীয় শহরগুলোতে প্রাথমিক জরিপ চালিয়ে এসব তথ্য পেয়েছে। মানসিক হতাশা, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে না পারা, সহপাঠীর প্ররোচনায় এবং প্রেম বিচ্ছেদের কারণে নারীরা ইয়াবায় আসক্ত হচ্ছেন।

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ইয়াবাসক্ত নারীদের নিউরোলজি আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যায়। মস্তিষ্কে ধারণক্ষমতা কমে যায়। আসক্ত নারী একসময় মানসিক রোগীতে পরিণত হয়।

এ প্রসঙ্গে আলাপ হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. সদীপ রঞ্জন দেব বলেন, ‘ইয়াবা সেবন করার কারণে মস্তিষ্কে ধারণ ক্ষমতা কমে যায়। ইয়াবা সেবনে নারীদের যে ভয়াবহ ক্ষতি হয় তা হচ্ছে নিউরোলজি নষ্ট হয়ে যাওয়া।

কর্ম করার জন্য শরীরের যেসব অর্গানগুলো রয়েছে তা অকেজো হয়ে যায়। এসময় মাথায় কেবল সেক্স কিংবা অপকর্মের বিষয় ঘুরাফেরা করে। তাছাড়া এ মাদক নিয়মিত গ্রহণ করতে পয়সার প্রয়োজন আছে। সেটি যোগাড় করতে মাদকসেবীরা বিপদগামী হওয়ার আশঙ্কা শতভাগ।’

তিনি জানান, গৃহবধূরা সংসারের কাজকর্মে মনোযোগ দিতে পারেন না। নারী শিক্ষার্থীরা পড়া মনে রাখতে পারেন না। কেউ কেউ আবার মানসিক রোগী হয়ে যায়।

অনেক নারী যৌন উত্তেজনা ও মিলনকে আরো দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করে। এই ধারণা তাদের ভুল। কারণ, ইয়াবা ট্যাবলেট যৌন শক্তি বৃদ্ধি করে না বরং দিন দিন আরো নিস্তেজ করে দেয়।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (গোয়েন্দা) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, দেশে যতো নারী মাদকসেবী রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ইয়াবা সেবন করে।

পরে তারা নানা ধরণের অনৈতিক ও বেআইনি কাজে তারা জড়িয়ে পড়ে। কোনোসময় সেটি অবস্থার শিকার হয়ে আবার কোনো সময় নিজ উদ্যোগী তারা এ কাজ করেন।

শেয়ার করুন: