আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ নিখোঁজ এক রাজকুমারী কোথায় আছে তা প্রকাশ করার জন্য দুবাই’র শাসকের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, নইলে তারা এই ঘটনাকে ‘গুম’ বলেই গণ্য করবে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, রাজকুমারী শেখ লতিফা কোথায় আছেন এবং তার আইনগত অবস্থা কি সেটা অবশ্যই দুবাই কর্তৃপক্ষের প্রকাশ করা উচিৎ।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আরও বলেছে, “রাজকুমারী কোথায় আছেন এবং কী অবস্থায় আছেন সেটা প্রকাশে ব্যর্থ হলে এটিকে গুম বলেই ধরা হবে। কারণ এমন প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে যে সংযুক্ত আরব আমিরাতের কর্তৃপক্ষ তাকে আটকে রেখেছে।”
দুবাই’র শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুমের কন্যা শেখ লতিফা বিনতে মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম গত মার্চ থেকে নিঁখোজ রয়েছেন।
গত মার্চে ৩২ বছর বয়সী শেখ লতিফা ইউটিউবে এক ভিডিও পোস্টে জানিয়েছিলেন, তিনি দুবাই থেকে পালাচ্ছেন, কারণ সেখানে তিনি পরিবারের হাতে নানা দুর্ব্যবহারের শিকার এবং তার ওপর নানা ধরণের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
ঐ ভিডিও পোস্টে শেখ লতিফা জানিয়েছিলেন, তাঁর বাবা হচ্ছেন দুবাইর শাসক মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাখতুম এবং মা আলজিরিয়ান হুরিয়া আহমেদ। তিনি এর আগেও দুবাই থেকে পালানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পরের মাসেই দুবাই সরকারের একটি সূত্র জানিয়েছিল এই পালিয়ে যাওয়া ‘রাজকুমারী’ দুবাইতে ফিরে এসেছেন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ একজন সাক্ষীর বরাত দিয়ে বলছে, মার্চের চার তারিখে যখন শেখ লতিফা সমূদ্র পথে তৃতীয় একটি দেশে পালাচ্ছিলেন, তখন তাকে মাঝপথে আটক করে ফেরত পাঠানো হয়। যুক্তরাজ্য ভিত্তিক একটি গ্রুপ ‘ডিটেইনড ইন দুবাই’ও রাজকুমারী শেখ লতিফার বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার।
তারা বলছে, শেখ লতিফা যে নৌযানে করে পালাচ্ছিলেন, সেটি ভারত উপকুলের প্রায় ৮০ কিলোমিটার দূরে থামানো হয়েছিল। তার সঙ্গে নৌযানে ছিল এক বন্ধু এবং ফিনল্যান্ডের এক মহিলা।
উল্লেখ্য এর আগেও খবর বেরিয়েছিল যে, রাজকুমারী লতিফা তার এক বান্ধবী, যিনি ফিনল্যান্ডের নাগরিক, এবং ফরাসী একজন সাবেক গোয়েন্দার সহযোগিতায় একটি ইয়ট বা প্রমোদ তরী ভাড়া করে গোপনে ভারতে রওয়ানা হয়েছিলেন। তার পরিকল্পনা ছিল, ভারত থেকে তিনি বিমানে করে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইবেন।
কিন্তু পশ্চিমা মিডিয়া এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে খবর হয়, গোয়ার উপকূলের কাছে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভারতের ন্যাভাল কমান্ডোরা ইয়টটি আটক করে প্রিন্সেস লতিফা সহ অন্য দুজনকে দুবাই কর্তৃপক্ষের আগে তুলে দেয়। ভারতীয় কয়েকটি মিডিয়াতেও এ খবর বের হয়। ভারত সরকার বা ভারতীয় নৌবাহিনী অবশ্য এ নিয়ে কোনো মুখ খোলেনি।