মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের দিকে জুতা-ছোঁড়া ইরাকি সাংবাদিক মুনতাদের আল-জায়েদি দেশটির পার্লামেন্ট নির্বাচনে দাঁড়াচ্ছেন। আগামী সপ্তাহে অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে শিয়া নেতা মোক্তাদা আল-সদরের জোটের একজন প্রার্থী হিসেবে অংশ নিচ্ছেন তিনি।
২০০৮ সালে ইরাকে সাদ্দাম হোসেনের পতনের পাঁচ বছর পর বাগদাদ সফরে গিয়ে তৎকালীন ইরাকি প্রধানমন্ত্রী নুরি আল-মালিকিকে সঙ্গে নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইরাকের আল-বাগদাদিয়া টিভির সাংবাদিক জায়েদি। তিনি হঠাৎ উঠে দাঁড়িয়ে জর্জ বুশকে ‘কুকুর’ বলে সম্বোধন করে তাকে লক্ষ করে তার দুটি জুতা ছুঁড়ে মারেন।
ওই সময় জায়েদি চিৎকার করে বলেন, ‘দুটির জুতার একটি হচ্ছে ইরাকি জনগণের বিদায়ী চুম্বন। আর অপরটি মার্কিন অভিযানে নিহতদের স্ত্রী-সন্তানদের পক্ষ থেকে।’ জুতা দুটির কোনটাই মার্কিন প্রেসিডেন্টের গায়ে লাগেনি।
জুতা ছুঁড়ে মারাটা আরবের সংস্কৃতিতে গুরুতর অপমানসূচক বলে মনে করা হয়। ওই ঘটনার পর আল-জায়েদি রাতারাতি আরব বিশ্বে একজন ‘হিরো’ বা নায়কোচিত ব্যক্তিতে পরিণত হন।
ঘটনায় প্রেসিডেন্ট বুশ অবশ্য বলেছিলেন, তিনি এতে রাগ করেননি, বরং আমোদ পেয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে বহু বিচিত্র ঘটনা দেখেছি। তবে সবচেয়ে আজব ঘটনা ছিল এটাই।’
নিরাপত্তারক্ষীরা জায়েদি আটক করে এবং একজন বিদেশিকে আক্রমণের জন্য তার ১২ মাসের কারাদণ্ড হয়। পরবর্তী সময়ে জায়েদি ৯ মাস জেল খাটার পর বেরিয়ে আসেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বন্দী অবস্থায় তার ওপর কারারক্ষী ও কর্মকর্তারা অত্যাচার করেছেন। জেল থেকে বেরিয়ে আল-জায়েদি সাংবাদিকতা ছেড়ে দেন। তিনি ইউরোপ গিয়ে ইরাক যুদ্ধের শিকার ব্যক্তিদের জন্য একটি মানবিক প্রতিষ্ঠান খোলেন।