সোহাগ-এশার অনৈতিক – সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ মানেই আলোচনা সমালোচনায় মুখর এক সংগঠনের নাম। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে সংগঠনটির ভেতরে-বাইরে শীর্ষ দুই নেতার সাংগঠনিক দুর্বলতা চরমভাবে প্রতিয়মান হয়েছে। সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে রগ কেটে দেয়ার গুজব এবং শারিরীকভাবে লাঞ্ছিত হওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কবি সুফিয়া কামাল হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইফফাত জাহান এশাকে নিয়ে।
ঘটনার রাতে ১০ এপ্রিল প্রকৃত ঘটনা না জেনেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় এশাকে তাৎক্ষণিক বহিষ্কার করা হয়। এরপর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে সেই বহিষ্কারাদেশ। প্রায় সব নেতাই না জেনে না বুঝে, ছাত্রলীগে অপরাধীর কোনো ঠাঁই নেই বলে তা প্রচার করে এশার বিরুদ্ধে চলে যান।
ঠিক পরদিনই দুপুরের পর থেকেই অপরাধী এশার বিরুদ্ধে অবস্থান পরিবর্তন করে ঘটনায় তদন্ত কমিটি করে। ৪ সদস্যের তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে এশাকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করে বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
এমনকি ৩৬ ঘন্টার ব্যবধানে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এশাকে ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেন। এ নিয়েও নানামূখী প্রশ্ন রয়েছে। কেন সেই রাতে তারা ঘটনাস্থলে যাননি এবং ছাত্রলীগের একজন নেতাকে উদ্ধারে তাদের ভূমিকা রহস্যজনক কেন ছিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, এশার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারে সবচে বড় নিয়ামক হিসাবে কাজ করেছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি এম সাইফুর রহমান সোহাগের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক। এতদিন ধরে বিষয়টি সংগঠনের ভেতরে বাইরে নানামুখী গুঞ্জন থাকলেও এখন তা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। ছাত্রলীগের ভেতরে বাইরে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় চলছে বলেও জানা গেছে।
সংগঠনের কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতা এবং সাইফুর রহমান সোহাগের ঘনিষ্ঠজনরাই বলেছেন, সাইফুর রহমান সোহাগ এবং এশার একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। রাত বিরাতে তারা একান্তে সময় কাটিয়েছেন। তার প্রতি বিশেষ দুর্বলতার কারণেই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ওই রাতে বহিষ্কার করা হলেও ২৪ ঘন্টা পরই তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়। এমনকি এশাকে বাঁচাতে গিয়ে ২৪ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করা হয়।
যাদের মধ্যে মূলত অপরাধীর সংখ্যা গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনে ৩ থেকে ৪ জন। বাকি সবাই এশাকে বাঁচাতে গিয়ে আহত পর্যন্ত হয়েছিল। এমনকি যে মেয়েটি ৮ এপ্রিল থেকে এখনো ভারতে অবস্থান করছেন তাকেও বহিষ্কার করা হয়েছে। এ বিষয়ে সাইফুর রহমান সোহাগকে সকাল ১১.১৪ মিনিটে এ প্রতিবেদক ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি। তাই মন্তব্য পাওয়া যায়নি।