বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন’ এমন বক্তব্য দেওয়ায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম এবং উক্ত বক্তব্য প্রচার করায় জাতীয় দুটি পত্রিকার সম্পাদক বরাবর আইনি নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২৩ এপ্রিল) দুপুরে সরকারি ডাকযোগে নোটিশটি পাঠান তারেক রহমানের আইনজীবী ও বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
নোটিশের বিষয়ে কায়সার কামাল সাংবাদিকদের জানান, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন’ মর্মে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম যে বক্তব্য দিয়েছেন এবং সেই বক্তব্য যে দুটি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে, তা প্রত্যাহার করতে বলা হয়েছে। তারেক রহমানের নির্দেশে ওই বক্তব্য প্রত্যাহার চেয়ে একটি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।’
‘আগামী ১০ দিনের মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহার না করলে, প্রতিমন্ত্রীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আইনে আলাদা আলাদাভাবে মামলা করা হবে’ যোগ করেন কায়সার কামাল। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি লিগ্যাল নোটিশ পাঠিয়েছি। নোটিশে বলা হয়েছে যে, তিনি যে প্রকাশ্যে বক্তব্য দিয়েছেন, তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন, এই বিষয়ে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, এটা মিথ্যে, বানোয়াট ও মোটিভেটেড।’
এদিকে সকালে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছেন বলে জানানোয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন রুহুল কবির রিজভী। তারেক রহমান যদি বাংলাদেশি পাসপোর্ট লন্ডন হাইকমিশনে জমা দিয়ে থাকেন, তাহলে তা প্রদর্শনের চ্যালেঞ্জও দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব।
প্রসঙ্গত, গত ২১ এপ্রিল শনিবার যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগ আয়োজিত অনুষ্ঠানে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন। তিনি বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে পাসপোর্ট জমা দিয়ে তারেক এই পদক্ষেপ নিয়েছেন।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনে সবুজ পাসপোর্ট জমা দিয়ে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন তারেক রহমান। তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, সেই তারেক রহমান কিভাবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। এই বক্তব্য পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বরাত দিয়ে ২৩ এপ্রিল সোমবার জাতীয় দুটি দৈনিকে প্রকাশিত হয়।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের শুরুর দিকে গ্রেপ্তার তারেক রহমান পরের বছরের ৩ সেপ্টেম্বর প্যারোলে মুক্তি পেয়ে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাজ্যে যান। এরপর জামিনের মেয়াদ শেষ হলেও তিনি আর ফেরেননি।
এ ব্যাপারে গতকাল আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছিলেন, ‘বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানকে দেশে ফেরাতে যুক্তরাজ্য সরকার আগ্রহ দেখিয়েছে বলেই বাংলাদেশ আলোচনা চালিয়েছে।’ তবে, এই আলোচনা অনেকদূর এগিয়ে গেছে জানালেও খালেদা জিয়ার ছেলেকে দেশে ফেরানোর পর আলোচনাকে সফল বলবেন মন্ত্রী।