গত পাঁচদিন ধরে একই রকম আছে রাজীবের শারীরিক অবস্থা। গত ১০ এপ্রিল অবস্থা হঠাৎ করেই খারাপ হওয়ার পর আর উন্নতি হয়নি। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাজীবের হৃদপিণ্ড ও ফুসফুস সচল রয়েছে। কিন্তু তারা অপেক্ষা করছেন, মস্তিষ্ক সচল হওয়ার। রাজীবের এ অবস্থাকে ‘ডিপ কোমা’ বলছেন তারা। বলছেন, খুব ব্যতিক্রম বা অলৌকিক কিছুর জন্যই অপেক্ষা করছেন তারা।
রাজীবের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (ডিএমসিএইচ) নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. অসিত চন্দ্র সরকার বলেন, রাজীবের অবস্থা খারাপ হওয়ার পরে আর কোনো উন্নতি হয়নি, সেই একই রকম রয়েছে। কোনো ধরনের উন্নতির লক্ষণও আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। রাজীবের হৃদপিণ্ড এবং ফুসফুস সচল রয়েছে, মস্তিষ্কের যে ধরনের সাড়া পেলে আমরা আশা করতে পারি সেই রকম কিছু হয়নি। তিনি বলেন, রাজীবের এই অবস্থাকে আমরা ‘ডিপ কোমা’ বলতে পারি। খুব ‘এক্সেপশনাল’ হলে হয়তো এই অবস্থা থেকেও রোগী ফিরে আসে।
গত ১০ এপ্রিল ভোর ৪টা থেকে হঠাৎ শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে রাজীবের। তার শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট হওয়াতে সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিছু সময় ভালো থাকলেও পরে আবার সেই সমস্যা দেখা দেয়। ঝুঁকি এড়াতে রাজীবকে নেওয়া হয় লাইফ সার্পোটে।
রাজীবের চিকিৎসায় গঠন করা মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও ঢামেক হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শামসুজ্জামান শাহীন বলেন, ‘একজন স্বাভাবিক মানুষের গ্লাসগো কোমা স্কেল (জিসিএস) ১৪-১৫ থাকে। জিসিএস ৮ এ নেমে এলে তখন আমরা রোগীর অবস্থাকে ক্রিটিক্যাল বলি। রাজীবের জিসিএস এখন তিনের কিছু বেশি। যখন জিসিএস তিন এর নিচে চলে যায় তখন মানুষটি আর বেঁচে থাকে না। রাজীবের জন্য আমরা অলৌকিক কিছুর অপেক্ষা করছি।’
গত ৩ এপ্রিল কারওয়ান বাজার সোনারগাঁও হোটেলের বিপরীতে পান্থকুঞ্জ পার্কের সামনে স্বজন বাস ও বিআরটিসির বাসের পাল্লাপাল্লিতে রাজীবের ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে দ্রুত পান্থপথে শমরিতা হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে সেখান থেকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।