কোটা সংস্কার আন্দোলন

কোটার আন্দোলনে ছাত্রলীগ, পদত্যাগ তিন নেতার

কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন ছাত্রলীগের অনেক নেতাও। কেউ কেউ পেছন থেকে আন্দোলন সমর্থন করছেন, আবার কেউ কেউ আন্দোলনে যোগ দিতে সংগঠন থেকে পদত্যাগও করছেন। এরই মধ্যে ফেসবুক ও দরখাস্তের মাধ্যমে তিন নেতা পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তারা শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন। চলমান কোটা আন্দোলনের নেতৃত্বে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের পদধারী একাধিক নেতা। সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তারা নিয়মিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়া নেতারা হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস অনুষদের ট্যুরিজম বিভাগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল্লাহ সাইফ, শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক শাখা ছাত্রলীগের উপ-অ্যাপায়ন বিষয়ক সম্পাদক অছিবুর রহমান, ফলিত পরিসংখ্যান বিভাগের সাধারণ সম্পাদক শরীফ হাসান সুজন। এ ছাড়াও অনেক নেতা ফেসবুকে ছাত্রলীগের হামলার সমালোচনা করেন। পদত্যাগের ঘোষণা দানকারী সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘ছাত্রলীগ জাতির পিতার নিজ হাতে গড়া সংগঠন। ছাত্রলীগ ডাকসুর ভূমিকা পালন করে।

ছাত্রলীগ ছাত্রদের অধিকারে কাজ করে। ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের বন্ধু। ছাত্রলীগের ভূমিকা কি দেখা গেল? এই ছাত্রলীগ বঙ্গবন্ধুর কোনো আদর্শ লালন করে জানি না। সজ্ঞানে আমি ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ ছাত্রলীগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে পদত্যাগ করছি। আর না, অনেক হয়েছে।’

এ বিষয়ে বিজনেস অনুষদ শাখার সভাপতি মো. বোরহান উদ্দীন বলেন, ‘আমি শুনেছি সে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছে। এখনো পদত্যাগপত্র হাতে পাইনি।’ এ ছাড়া শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক শাখা ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক অছিবুর রহমান ৯ এপ্রিল দেওয়া তার পদত্যাগ পত্রে লেখেন, ‘আমি ব্যক্তিগত কারণে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছি।’ জানতে চাইলে এই নেতা বলেন, ‘আসলে বিষয়টি আপনারাও জানেন। কোটা সংস্কার সময়ের দাবি। যেহেতু ছাত্রলীগ সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই ন্যায্য দাবিতে সমর্থন দেয়নি, যেহেতু আমি কোটা সংস্কারের পক্ষে— তাই পদত্যাগ করেছি।’ এ ছাড়া কোটা সংস্কার চেয়ে ছাত্রলীগের আন্দোলন করতে গিয়ে ছাত্রলীগের অনেক নেতাই আহত হয়েছেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার উপ-গণযোগাযোগ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখেন, ‘বঙ্গবন্ধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন করতে গিয়ে নিজের ছাত্রত্ব হারিয়েছেন। তবুও অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। আর এখনকার নেতারা পদ হারানোর ভয়ে লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থীর পক্ষে কথা বলতে পারেন না।

ছি, আমরা না তাঁরই আদর্শ বুকে ধারণ করি!’ তিনি আরও লেখেন, ‘অহিংস আন্দোলন সহিংস হয়ে উঠেছে। যারা হসপিটালে আছে তারা আমাদেরই ভাই, বন্ধু। ক্ষমতা আজীবন থাকে না। এই আন্দোলন কোনো দলের না, এটা সকল সাধারণ শিক্ষার্থীর আন্দোলন।’

শেয়ার করুন: