বাংলাদেশ এখন বিশ্বের বিস্ময়। বাংলাদেশের উন্নয়ন মডেল এখন বিশ্বব্যাপী জাতিসংঘসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো অনুসরণ করছে। জাপানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের সফরে আলোচনা হয়েছে। সফরের সবচেয়ে বড় সফলতা হলো বাংলাদেশকে জাপানের ৬ বিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রদান। এ অর্থ অগ্রাধিকার ভিত্তিকে বিভিন্ন প্রকল্পে ব্যবহার করা হবে।
গতকাল শনিবার বিকেল ৪টায় গণভবনে জাপান সফরের নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেছেন, আমরা সবসময় জাপানীদের আমাদের পাশে পেয়েছি।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে জাপানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আরো ভাল হয়েছে। এবারের সফরে আমি জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে এদেশে আসার আমন্ত্রণ জানিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাপানের সম্রাট আমার সঙ্গে বৈঠককালে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক উন্নয়নের প্রশংসা করেছে। তাকেও বাংলাদেশে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেছেন, জাপানে বাংলাদেশী শ্রমিকদের নিয়োগ দানের বিষয়ে আমি জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছি। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের সফল আলোচনা হয়েছে বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, জাপানের সঙ্গে আলোচনায় আমরা জাপানের ফুকুশিমা পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অভিজ্ঞতা শেয়ারের বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়েছি।
বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি বৃদ্ধি, পররাষ্ট্র বিষয়ক সমঝোতা স্মারক, জাপানী বিনিয়োগকারীদের জন্য চট্টগ্রামে একটি বিশেষায়িত অর্থনৈতিক জোন তৈরি ও ব্যবসা বৃদ্ধির বিষয়ে আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে এক জোড়া রয়েল বেঙ্গল টাইগার জাপানে প্রেরণের বিষয়েও আমি দেশটিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এতে জাপানীরা বাংলাদেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানতে পারবে।
মধ্যবর্তী নির্বাচনের কোনো পরিকল্পনা আছে কি না? এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আপনারা চাইলে আবার আমরা মধ্যবর্তী নির্বাচন দিয়ে দেব। আপনারা যদি আবার জ্বালাও-পোড়াও এবং খুন দেখতে চান তাহলে আমরা আবার নির্বাচন দিয়ে দেব। আমাদের যে উন্নয়নের কাজ রয়েছে, যেমন পদ্মা সেতুর কাজ শুরু করেছি তা শেষ করতে চাই। আমি যে আন্তরিকতা নিয়ে দেশের জন্য কাজ করবো অন্য কেউ এ কাজ করবেনা। এ বিষয়ে আমি সিওর। কারণ আমার জন্ম বাংলাদেশে।
জামায়াত নিয়ে সম্প্রতি আইনমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জামায়াত থাকবে কি থাকবে না এটা উচ্চ আদালতের বিষয়। আর এ নিয়ে আইনমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সঠিক। বিভ্রান্ত হওয়ার কিছু নাই। তবে আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করেছি। এটা শেষ করবো।”
সরকারকে ‘পচতে’ সময় দেয়া হচ্ছে- বিএনপি চেয়ারপারসনের এই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী পাল্টা বলেন, ‘পচছে’ বিএনপিই, আমরা বিএনপিকে ফরমালিন দিয়ে তাজা রাখার চেষ্টা করছি বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মুক্তিযুদ্ধে বিদেশী বন্ধুদের সংবর্ধনা ক্রেস্টে স্বর্ণ জালিয়াতির বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের দেশে কথায় আছে স্বর্ণকার মায়ের গহনা বানালেও সেখান থেকে স্বর্ণ চুরি করে। তিনি বলেন, আমরা মুক্তিযুদ্ধের অবদানের জন্য বিদেশীদের সম্মান দিয়েছি সেটাই বড় কথা। কোন ক্রেস্টে কত তোলা স্বর্ণ ছিলো তা তো মেপে দেখা হয়নি। আর এ বিষয়টি নিয়ে অযথা হইচই করা হচ্ছে। বেশি হইচই হলে নিজ দেশের সম্মান কমবে।
র্যাুব প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, র্যাব এখন একটি বাস্তবতা। যে কেউ চাইলেই হুট করে একে বাতিল করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, র্যাবের অনেক সফলতাও রয়েছে। তারা অনেক ভালো ভালো কাজ করেছে- সেই বিষয়টাও সামনে রাখতে হবে। এ সময় তিনি হাইকোর্টের গঠিত বেঞ্চের সমালোচনা করে বলেন, সব কাজ যদি হাইকোর্টের বেঞ্চই করে দেয় তাহলে আমাদের তো আর কিছুই করার থাকে না।